যেসব লক্ষণ দেখা দিলেই কমিয়ে দেবেন চিনি খাওয়া!

Odd বাংলা ডেস্ক: আমরা সবাই জানি দৈনন্দিন খাদ্যভ্যাসে চিনির পরিমাণ একটু কম রাখাই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু মিষ্টি, আইসক্রিম অথবা কোল্ড ড্রিঙ্কস খাওয়া বাদ দিলেও কী আদতে বেশি চিনি খাওয়া হচ্ছে? কী করে বুঝবেন চিনি আরও কম খাওয়া দরকার কিনা? উপায় আছে। আপনার শরীরি আপনাকে বলে দেবে আপনার চিনি খাওয়া অতিরিক্ত হচ্ছে কিনা। এসব লক্ষণ আপনি দেখতে পেলে বুঝবেন দৈনিক চিনি খাওয়াটা আরও কমিয়ে আনা দরকার।

 ঠিক কতখানি চিনিকে আসলে অতিরিক্ত চিনি বলা যেতে পারে? ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন WHO এর মতে দৈনিক মাত্র ৫ শতাংশ ক্যালোরি আসা উচিৎ চিনি থেকে। অর্থাৎ আপনি নিজের খাবারে দিনে মোটামুটি ৬ চা চামচ চিনি যোগ করতে পারেন, তার বেশি নয়। লক্ষণগুলো থেকে যদি মনে হয় আপনি অতিরিক্ত চিনি খাচ্ছেন, তাহলে দেখুন বাইরের কোনো খাবার খাওয়ার মাধ্যমে নিজের অজান্তেই চিনি গ্রহণ করছেন কিনা। সিরিয়াল, দই এমন স্বাস্থ্যকর খাবারগুলওতেও অনেক চিনি থাকতে পারে। এ কারণে অতিরিক্ত চিনি খাবারে যোগ না করে প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি খাবারগুলো খান।

 ১) আপনার ত্বকের অবস্থা খারাপ হচ্ছে

বেশি চিনি খাওয়া ত্বক একেবারে নষ্ট করে ফেলতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার সাথে সাথে ব্রণের উৎপাত বাড়ে। যাদের বেশি বা মাঝারি ধরণের ব্রণের সমস্যা আছে, তাদের খাদ্যভ্যাসে বেশি পরিমাণে চিনি থাকতে দেখা যায়। যারা কম চিনি খান তাদের ব্রণের সমস্যা সামান্যই থাকে।

 ২) আপনি সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন

ব্রেকফাস্ট অথবা লাঞ্চে যদি প্রচুর চিনিযুক্ত খাবার খান তাহলে বিকেলের আগেই আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন, শরীর হাল ছেড়ে দিতে চাইবে। প্রচন্ড মাথাব্যথা করতে পারে। এর জন্য পরিমিত পরিমাণে চিনি আছে এমন খাদ্যভ্যাস বজায় রাখুন।

 ৩) ডেন্টিস্টের তিরস্কার শুনছেন আপনি

দাঁতে ক্যাভিটি হওয়া মানেই দাঁতের ডাক্তার ধরে নেবেন আপনি বেশি চিনিযুক্ত খাবার খাচ্ছেন। আমাদের মুখের ব্যাকটেরিয়া এগুলোকে ব্যবহার করে একধরনের এসিড তৈরি করে যাতে দাঁতে প্লাক পড়ে। এ থেকে পরে ক্যাভিটি তৈরি হয়।

 ৪) উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা

১২০/৮০ রক্তচাপ থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু খাদ্যভ্যাসে অতিরিক্ত চিনি অন্তর্ভুক্ত থাকলে তা বেড়ে যেতে পারে। সোডিয়াম অর্থাৎ লবণ খাওয়া নিয়ন্ত্রণের চাইতেও চিনি নিয়ন্ত্রণ এক্ষেত্রে বেশি জরুরী। এতে বাড়তে পারে হৃদরোগের ঝুঁকি।

 ৫) আপনার কোলেস্টেরল বেশি বেড়ে গেছে

অতিরিক্ত চিনির আরেকটি অজানা সমস্যা হলো তা কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় রক্তে। চিনি ভালো কোলেস্টেরোলের পরিমাণ বাড়ায় ও খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়।

 ৬) আপনি ব্যায়ামের পরে একেবারে শক্তিহীন হয়ে পড়েন

ব্যায়ামের জন্য শরীরকে যথাযথ জ্বালানী দেওয়া জরুরী। ব্যায়াম করতে গিয়ে যদি একেবারে সব শক্তি নিঃশেষ হয়ে পরে তাহলে হয়তো আপনি বেশি চিনি খাচ্ছেন। আপনি যদি ব্যায়ামের আগে বেশি চিনিযুক্ত খাবার বা পানীয় গ্রহণ করেন তাহলে ব্যায়ামের শেষে ভীষণ অবসাদ আপনাকে গ্রাস করবে।

৭) ওজন বেড়ে যেতে পারে

হঠাৎ করেই যদি আপনার মনে হয় জিন্সটা একটু টাইট লাগছে, ভুঁড়িটা ঠেলে বের হয় আসছে তাহলে হয়তো আপনার মিষ্টি খাওয়াটা কমানোর সময় হয়েছে। বিশেষ করে চিনিযুক্ত পানীয় পান করার সাথে যোগসূত্র রয়েছে ওজন বাড়ার। 

৮) দুশ্চিন্তা এবং বিষণ্ণতা

বেহস কিছু গবেষণা বলে চিনি খাওয়ার সাথে মন-মেজাজের অবনতির সম্পর্ক আছে। বেশি চিনি খাওয়া হলে শরীরে ইনফ্লামেশন বাড়ে। এর থেকেই সুত্রপাত হয় বিষণ্ণতার। হোল গ্রেইন এবং টাটকা ফল ও সবজি আছে এমন খাদ্যভ্যাস অনুসরণ করলে বিষণ্ণতা ও দুশ্চিন্তা কেটে যেতে দেখা যায়।

এছাড়াও বেশি চিনি খাওয়ার ফলে অন্যান্য যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো-

- সবসময় ক্ষুধা লেগে থাকা

- ঘন ঘন ঠাণ্ডা-জ্বর হওয়া

- মিষ্টি খাবারে আরও চিনি যোগ করার প্রবণতা

- মনোযোগের অভাব

- ইনসুলিন রেজিস্টেন্স

- লিভার, প্যানক্রিয়াস ও কিডনিতে সমস্যা

- বাতের ব্যাথা

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.