জার্মানিতে করোনা পরীক্ষায় বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ


Odd বাংলা ডেস্ক: জার্মানিতে দ্রুত করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য গঠিত বেসরকারি কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে৷ জানা গেছে, নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছে সরকার৷

সংকট মোকাবেলা করতে যত বেশি সম্ভব করোনা পরীক্ষা বড় ধরনের হাতিয়ার৷ এভাবে প্রকৃত চিত্র উঠে এলে সরকার ও প্রশাসনের পক্ষে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হয়ে পড়ে৷ 

জার্মানিতে সেই উদ্দেশ্যে ব্যাপক হারে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ এ বছরের মার্চ মাস থেকে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে একবার বিনা মূল্যে করোনা পরীক্ষা করানোর সুযোগ পাচ্ছে সাধারণ মানুষ৷ 

প্রাথমিক এই পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া না গেলে সেই ফলাফল দেখিয়ে দোকান, বাজার থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁয় প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে সাধারণ জনতা৷ 

সে দেশে এমন করোনা পরীক্ষার সুযোগ করে দিতে সরকার বেশ উদারতার পরিচয় দিয়ে অসংখ্য বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে করোনা পরীক্ষা করার অনুমোদন দিয়েছে। এমনকি করোনা পরীক্ষার ব্যয় পুরোপুরি বহন করছে৷ সেই সুযোগে অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে মোটা টাকা কামিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷

অভিযোগ ওঠার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন৷ গত শনিবার তদন্ত শুরু হয়েছে৷ নানা ধরনের অভিযোগ উঠে আসছে৷ যেমন- কোলন শহরে একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে বাস্তবে ৭০ জনের করোনা পরীক্ষা হলেও এক হাজার পরীক্ষার জন্য সরকারি ভর্তুকি নেওয়া হয়েছে৷ 

সরকার জনপ্রতি ১৮ ইউরো দেওয়ার ফলে এভাবে বিশাল অঙ্কের মুনাফা করছে একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান৷ তা ছা়ড়া দ্রুত প্রশিক্ষণসহ একাধিক কারণে অনেক কেন্দ্রে ঠিকমতো পরীক্ষাও হচ্ছে না।

সে ক্ষেত্রে সংক্রমণের শিকার হলেও কোনো ব্যক্তি নেগেটিভ করোনা পরীক্ষা হাতে পেতে পারেন, এমন শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷

এমন প্রেক্ষাপটে করোনার পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোর ওপর আরো প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের জন্য চাপ বাড়ছে৷ সে দেশের বিচার মন্ত্রণালয়ের মতে, হিসাবপত্রের ওপর নজর রেখে সম্ভাব্য দুর্নীতি চিহ্নিত করতে হবে৷ বাণিজ্যিক প্রতারণার জন্য ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

তবে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পানের মতে, বেশির ভাগ করোনা পরীক্ষাকেন্দ্র নিয়ম মেনে কাজ করছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন৷

বিষয়টিকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ সরকারের ওপর চাপ বেড়েই চলেছে৷ ফলে সোমবার ফেডারেল ও ১৬টি রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা সে বিষয়ে আলোচনা করছেন৷ 

করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো এবং করোনা পরীক্ষার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ প্রতারণা করতে গিয়ে ধরা পড়লে কড়া শাস্তির হুমকি দিচ্ছে সরকার৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্থানীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্য ও কর দপ্তরকেও নজরদারির কাজে ব্যবহার করার প্রস্তাব দিয়েছেন৷

সার্বিকভাবে জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের হার কমে চলেছে৷ ফলে অনেক জায়গায় করোনা পরীক্ষা ছাড়াই দোকান-বাজার ইত্যাদি স্থাপনায় প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে সাধারণ মানুষ৷ 

অন্যদিকে করোনা টিকার দুটি ডোজ পাওয়া মানুষের সংখ্যাও ধীরে হলেও বাড়ছে৷ ফলে তাদের ক্ষেত্রেও করোনা পরীক্ষার প্রয়োজন হচ্ছে না৷ পরিস্থিতির আরো উন্নতি হলে করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোর প্রয়োজন আপাতত সে দেশে কমে যাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.