ভারত ভূষন, রাজপ্রাসাদ থেকে ফুটপাথে নেমে এসেছিলেন যে বলিউড হিরো




Odd বাংলা ডেস্ক: মন উদাস করা একটা সুরের টান দিয়ে যাচ্ছে তাঁর প্রতিটি আওয়াজ। নায়িকাকে পেতে তাঁর এই সুরের ঝঙ্কার অনেক মেয়েরই মন কেড়েছে। রেডিওতে গাইছেন নায়ক। যদিও তিনি লিপ দিচ্ছেন মাত্র। তবু অচিরেই সবার মনে আঁচর কেটে যাচ্ছে তার "জিন্দেগি ভার নাহি ভুলেঙ্গি ও বরসাত কি রাত"। ভাবছেন তো কোন ছবির সিকোয়েন্স? সিনেমার নাম "বরসাত কি রাত"।



১৯২০ সালে মেরঠে জন্মেছিলেন ভারতভূষণ। ছোটো থেকেই পড়াশোনাই দুর্দান্ত ছিলেন। প্রথমে নিজের পড়াশোনা সম্পন্ন করেন এই অভিনেতা। আর তারপর মুম্বইয়ে এসে স্ট্রাগাল করতে শুরু করেন। কিন্তু ভাগ্য তার ওপর বিশেষ ভাবে স্বদয় ছিলো। তিনি সহজেই বেশ কিছু ছবিতে কাজ করার সুযোগ পেয়ে যান। বাণিজ্য নগরী মু্ম্বইয়ের বুকে বেশ কয়েকটি বাংলো কিনেছিলেন তিনি। কিনেছিলেন কয়েকটি গাড়িও। সেই শুরু তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ক্রমেই তাঁর অর্থের পরিমান বাড়তে থাকে। তবু এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন আমি খুব ভালো টাকা গুনতে পারি না।
Image Source: Google


অবশেষে বিপূল অর্থের মালিক ভারত ভূষণ তাঁর দাদার কথায় হয়ে গেলেন ছায়াছবির প্রযোজক। এবং বেশ কিছু ছবির প্রযোজনা করলেন। যাঁর মধ্যে "বসন্ত বাহার" এক বিশেষ নাম। মধুবালার সঙ্গে তৈরি করলেন "বরসাত কি রাত"। তবে ভারত ভূষনের আর একটি ছবি আছে যার নাম না নিলেই নয়। আর তা হলো "বাইজু বাওরা"।

কিন্তু যে ভারত ভূষণের কাছে সৌভাগ্য অতি সহজেই এসেছিল তাঁর কাছে দুর্ভাগ্যও এল ততটাই সহজেই। একের পর এক ছবি ফ্লপ করলো তাঁর। বাংলো, গাড়ি সবই বিক্রি করতে হয়েছিল তাঁকে। এক বিশেষ সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন আমি হত দরিদ্র হয়ে গেলেও আমার খুব কষ্ট হয়নি। কিন্তু যখন আমার লাইব্রেরির সমস্ত বই বিক্রি হয়ে গেল তখন আমার খুব কষ্ট হয়েছিল।
Image Source: Google


জীবনের শেষ দিনগুলো একটা ছোট্ট বাড়িতে ভাড়া নিয়ে কাটিয়েছিলেন ভারত ভূষন। ১৯৯২ সালে তিনি মারা যান। মৃত্যুর সময় তাঁর পাশে না ছিলো কেউ জল দেওয়ার, না ছিলো কেউ তাঁর মৃতদেহ তোলার। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি সেদিন প্রমান করেছিল যে নিভে যাওয়ার প্রদীপের দিকে এখানে কেউ তাকায় না। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.