চিন ঢুকছে, আগেই জানিয়েছিলেন লাদাখের রাজনৈতিক নেতারা, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার শোনেনি



Odd বাংলা ডেস্ক: গত ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা সদস্য নিহত হন। চিনের একটি তাঁবু সরানোকে কেন্দ্র করে বিবাদের সূত্রপাত বলে জানা যায়। দফায় দফায় ৫ ঘণ্টার লড়াইয়ে প্রাণ হারান এক কর্নেলসহ ওইসব ভারতীয় সেনারা। কিন্তু এলাকার মানুষজনের বক্তব্য এই সংঘাত একদিন হতোই। কারণ চিনা সেনা বহুদিন ধরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকছে। এলাকার লোকদের শাসাচ্ছিল। লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছ ঘেঁসে রয়েছে নোয়মা গ্রাম। এটি প্যাংগং লেক থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে। নোয়মা ব্লক ডেভলপমেন্ট কাউন্সিলের প্রধান উরগেন শোডন। লাদাখ অটোনমাস হিল ডেভলপমেন্ট কাউন্সিল হওয়ার পর তিনি বিজেপির টিকিটে কাউন্সিল প্রধান হয়েছেন। ১৫ জুন গালওয়ানে সংঘর্ষ হওয়ার আগেই তিনি একাধিক ফেসবুক পোস্ট করে চিনা সেনার ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ার কথা প্রচার করেন। গত ১১ জুন তিনি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেন। ২০১৯ সালের ১১ জুলাই ওই পোস্ট তিনি করেছিলেন। সেখানে তিনি লেখেন, চিনা সেনারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ৬ কিলোমিটার ভেতরে নোয়মা ব্লকের ঢোলা গ্রামে এসেছে। সেখানে তারা চিনা পতাকা তুলেছে। এলাকার মানুষদের সেখানে ভারত, তিব্বত ও বৌদ্ধ পতাকা তুলতে বাধা দিচ্ছে।

 অন্য একটি পোস্টে উরগেন শোডন লেখেন, গ্রামের মানুষদের চিনা সেনারা ওই এলাকা পশু চরাতে বাধা দিচ্ছে। কারণ ওই এলাকা নাকি চিনের। শোডন এক ইংরেজি সংবাদমাধ্য়কে জানিয়েছেন, এই প্রথম নয়, ২০১৫ সাল থেকে বিষয়টি আমি তুলে আসছি। গত এপ্রিল মাসে এলাকায় ৩০০-৩৫০ চিনা সেনার গাড়ি দেখেছিলাম। তা ফেসবুকে লিখেওছিলাম। কিন্তু আমাকে বলা হয় ওইসব পোস্ট এলাকায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। ফলে তা ডিলিট করে দিই। লাদাখ অটোনমাস হিল ডেভলপমেন্ট কাউন্সিলের কাউন্সিলর ওই সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ২০১৭ সাল থেকে চুমুল, নোয়মা ব্লকের ডেমচোক, চুসুলে চিনা পতাকা তোলা নিয়ে ছোটখানে বিবাদ লেগেই রয়েছে। কিন্তু মিটেও যায়। একাকার বিজেপি নেতারাই নয়, কংগ্রেস নেতারাও দাবি করেছেন, এলাকায় চিন সেনার উপস্থিতি বেড়েই চলেছে। কাউন্সিলের প্রাক্তন প্রধান রিগজিন সালবার জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে ডেমচোকে একটি ক্যানালের উদ্বোধন করা হয়েছিল। পরে সেটি দখল করে নেয় চিনা সেনা।

 এলাকার পশুচারণ ভূমিও দখল করে নিয়েছে চিনা সেনা। প্য়াংগং লেক থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ফোবরাং গ্রাম। সেখানকার মানুষদের অভিযোগ, আগে এলএসির কাছাকাছি গ্রিন টপ এলাকা পর্যন্ত ভেড়া চরাতে যেতে পারতাম। কিন্তু চিন সেনারা বাধা দিতে লাগল। তাই এখন ওখানে যেতে পারি না। এলাকার নেতাদের দাবি, বিষয়টি তারা এলাকার সাংসদকে পর্যন্ত বলা হয়েছিল। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তাংসি বিধানসভা কেন্দ্রের নেতা থাসি নামগাল বলেন, প্রতি বছর চিন একটু একটু করে ফিঙ্গার ৪ পর্যন্ত এগিয়ে আসছে। লাদাখ কাউন্সিলের কাছে জানানো হয়েছিল কীভাবে চিনা সেনারা এগিয়ে আসছে। আমাদের পশুচারণে বাধা দিচ্ছে। বিষয়টি জম্মু ও কাশ্মীরের গভর্নর সত্যপাল মালিককেও বলা হয়। কিন্তু কিছুই হয়নি।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.