রহস্যময় গর্ত, মৃত পশুকে ফেললেও হয়ে যায় জীবিত!

Odd বাংলা ডেস্ক: মেল’স হোল নামক একটি গর্ত, যার কোনো শেষ নেই! এতে কোনো কিছু ফেললেও শব্দ হয় না। এমনকি গর্তের মুখে দাঁড়িয়ে জোরে শব্দ করলেও তা প্রতিফলিত হয় না। আজ সেই রহস্যময় গর্ত সম্পর্কে জানাব। ওয়াশিংটনের এলনসবার্গে এই গর্তটির অবস্থান। এটি তলাবিহীন গর্ত নামেও পরিচিত। 

অনেক বছর আগে কোস্ট টু কোস্ট নামে একটি এফএম রেডিও চ্যানেল ছিল। যে চ্যানেলে কোনো গান-বাজনা বা আজগুবি কোনো গল্প ব্রডকাস্ট করা হত না। এই চ্যানেলে ব্রডকাস্ট করা হতো কেবলমাত্র ইন্টেলিজেন্স, মিস্টেরিয়াস এবং প্যারানরমাল সব গল্প। 

এই চ্যানেলে অনেক রহস্যপূর্ণ গল্প শোনানো হয়েছে। যা সেই সময় ছিল তুমুল জনপ্রিয়। এ রেডিও চ্যানেলে যেসব রহস্যপূর্ণ গল্প এ পর্যন্ত ব্রডকাস্ট করা হয়েছে, তার মধ্যে একটি রহস্যপূর্ণ গল্প রয়েছে। যা সবাইকে অবাক করে দেয়। 

আর এ রহস্যপূর্ণ গল্পটি ছিল গভীর গর্তকে কেন্দ্র করে। ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখে এই গল্পটি ব্রডকাস্ট করা হয়েছিল। আর সেদিন এ গল্পটি বলেছিলেন মেল ওয়াটার নামক একজন আমেরিকান ব্যক্তি। সেই ব্যক্তি সে শোটির হোস্টকে একটি রহস্যপূর্ণ গভীর গল্প সম্পর্কে বলেছিলেন। মূলত তার নাম অনুসারেই এই গর্তটির নামকরণ হয় মেল’স ওয়াটার নামে।

ওই গর্তটি ছিল মেলের নিজের জমির অংশবিশেষ। মেইল ওয়াটার যতদিন এই গভীর গর্তের মালিক ছিলেন ততদিন সে প্রায়ই এই গভীর গর্তটির কাছে আসতেন। তিনি আরও বলেন, ১৯৮০ সালে এই গর্তের আশেপাশের সব মানুষেরা তাদের ময়লা-আবর্জনা যা কিছু ছিল সব দিক গর্তের ভেতরে ফেলত। 


এমনকি সেই বাসিন্দারা এই গর্তের মধ্যে তাদের পুরনো রেফ্রিজারেটর, পুরনো টায়ার, পুরনো ইলেকট্রনিক্সের অন্যান্য সব যন্ত্রপাতি এই গর্তের মধ্যে ফেলতো। এই গর্তের আশেপাশের সবাই ভাবত, এই গর্তের কোনো তলা নেই। অর্থাৎ এই গর্তটি ছিল অসীম। 

কেননা সেখানকার সব বাসিন্দা যখন সেই গর্তের মধ্যে কিছু ফেলত, তখন সে সব জিনিসপত্র গর্তের মধ্যে পড়ার কোনো শব্দ আসতো না। সাধারণত অন্যান্য যেসব গভীর গর্ত থাকে সেগুলোর মধ্যে কোনো কিছু ফেললে তার একটি বিকট শব্দ হয়। 

তবে এই গর্তের মধ্যে কোনো কিছু ফেললে শব্দ আসতো না। তাই সব বাসিন্দারা ভাবতো এই গর্তের কোনো তলা নেই। এমনকি এই গর্তের উপর থেকে কোনো শব্দ করলে তার কোনো প্রতিধ্বনিও ফিরে আসত না। মানুষেরা ভাবতো যে, এটা হয়তো বা নরকের দরজা।

১৯৯৩ সালে মেল ওয়াটার এবং তার স্ত্রী নতুন জায়গাটি কিনে নেয়। তবে তখন তার জানত না তাদের জমির অংশের মধ্যেই রয়েছে এমন এক রহস্যময় গর্ত। এরপর মেইল ওয়াটার এবং তার স্ত্রী একটি ডাস্টবিনের মতো করে ব্যবহার করতে শুরু করে। তারা প্রতিদিন অনেক নোংরাসহ অব্যবহৃত জিনিসপত্র ফেলত গর্তে।

তারা ধীরে ধীরে বুঝতে পারে, আসলেই এই গভীর গর্তের কোনো তলা নেই। মেল ওয়াটার একদিন একটি মাছ ধরার বরশির সাহায্যে সেই গর্তের মধ্যে অনেকখানি লম্বা দড়ি নামিয়ে দিলেন। তবুও সেই সুতো কোনো তলা খুঁজে পায়নি। 

পৃথিবীর সবচেয়ে গভীরতম গর্তের নাম হলো কোলা সুপারডিপ বোরহোল। যার গভীরতা ১২ কিলোমিটার। মেল ওয়াটার বলেন, তিনি সেই গভীর গর্তে ২৪ কিলোমিটার লম্বা সুতো নামিয়ে দেন। তারপরও তিনি এর কোনো তলা খুঁজে পাননি। 

এরপরই মেল ওয়াটার বুঝতে পারেন, এই গভীর গর্তটি হলো একটি সুপার ন্যাচারাল গর্ত। মেল ওয়াটার আরও খেয়াল করেন, তার পোষা কুকুর এই গর্তটিকে দেখলে ভয় পায়। ১০ মিটার দূর থেকে কুকুর যখন গর্তটিকে দেখতে পায় তখন তার কুকুর অদ্ভুত আওয়াজ করা শুরু করে দেয়।

আর যদি সেই কুকুরটিকে টেনে হিঁচড়ে জোর করে দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়ে দাঁড় করানো হয়। তবে কুকুরটি সেই গর্তটির কাছে গেলে ভয়ে পালিয়ে যায়। আমরা সবাই জানি যে, কুকুর প্যারানরমাল সব কিছুই দেখতে পায়। যা মানুষ দেখতে পায় না। আর তাই মাঝরাতের দিকে হঠাৎ করেই আমরা কুকুরের ডাকের শব্দ শুনতে পাই।

আর এসব দেখে মেল ওয়াটার সে গর্ত সম্পর্কে আশেপাশে থাকা বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসা করতে থাকেন, যে গর্তটির রহস্যময় ঘটনার পেছনে কোনো কারণ আছে কিনা? তাদের মধ্যে একজন বলেন, তার একটি কুকুর অনেকদিন আগে মারা গিয়েছিলেন। তিনি সে কুকুরটিকে এ গর্তের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন। তবে কিছুদিন পরেই সে ব্যক্তি তার কুকুরটিকে গভীর রাতে তার বাড়ির আশেপাশে দেখতে পেয়েছিলেন। 

অনেকেই তখন সে ব্যক্তিকে প্রশ্ন করেন যে, তুমি কীভাবে বুঝলে যে সে কুকুরটি তোমার? তখন সে ব্যক্তি উত্তর দেয়, আমি আমার কুকুরটির গলায় যে বেল্টটি ঝুলিয়ে দিয়েছিলাম ঠিক সেই বেল্টটি পড়া অবস্থায় আমি আমার কুকুরকে আমার বাড়ির আশেপাশে ঘুরতে দেখেছিলাম। আর আমি নিশ্চিত যে এটা আমারই কুকুর।

তাছাড়া এই কুকুরের গলার আওয়াজ এবং গায়ের রং সবকিছু একই। তখন সবাই ভাবতে থাকে, এই গর্তটিতে মৃত কোনো কিছু ফেলে দিলে তা পুনরায় জীবিত হয়ে ফিরে আসে। এসব অদ্ভুত ঘটনা মেল ওয়াটারের সঙ্গে ঘটে যাওয়ার পরে তিনি কোস্ট টু কোস্ট এফএম রেডিওতে তার ঘটনাটি ব্রডকাস্ট করেছিলেন। এরপর থেকে মেলের সঙ্গে ঘটতে থাকে অবিশ্বাস্য সব ঘটনা। সেসব জানানো হবে পরের পর্বে। ডেইলি বাংলাদেশের সঙ্গেই থাকুন। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.