এই গ্রামের ৮০ ভাগ মানুষই করোনায় আক্রান্ত!

Odd বাংলা ডেস্ক: মহামারির এই সময় প্রায় সব দেশেই কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগী রয়েছে। তবে জানেন কি? পেরুর অ্যামাজন জঙ্গলের কেইমিতোর প্রত্যন্ত শিপিবো আদিবাসী গ্রামের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষই প্রাণঘাতী এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

পেরুর কেন্দ্রীয় অ্যামাজন জঙ্গলের গভীরে শিপিবো আদিবাসীদের বসবাস। হাজার হাজার বছর ধরে তারা এই ভূমিতে বসবাস করছে। তারা একদিকে যেমন রোগব্যাধি, প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ মোকাবিলা করে টিকে আছে। তেমনই কাঠুরে এবং অন্যান্য বিদেশিদের আক্রমণ থেকে নিজেদের আবাস ভূমি রক্ষা করেছে। 

তবে বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস শিপিবো উপজাতির উপর কঠিন আঘাত হেনেছে। পেরুর আমাজন জঙ্গলের কেইমিতোর প্রত্যন্ত শিপিবো আদিবাসী গ্রামের প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ মানুষের মধ্যেই করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিয়েছে। এই গ্রামটি এতোটাই প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত যে নিকটতম হাসপাতালে যেতেও আট ঘণ্টা নৌকা চালিয়ে যেতে হয়।  

তাছাড়া প্রত্যন্ত এই অঞ্চলে সাধারণ চিকিৎসা সামগ্রী এবং ওষুধ সরবরাহও পর্যাপ্ত নয়। আধুনিক কোনো সুযোগ সুবিধা নেই। গুরুতর অবস্থায় ১০ জন রোগীর মধ্যে একজন রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে। শিপিবো আদিবাসী আমাজন জঙ্গল জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করে। তাদের প্রকৃত জনসংখ্যা সম্পর্কে কারো জানা নেই।  

তবে শিপিবো আদিবাসীর জনসংখ্যা ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজারের মধ্যে বলে অনুমান করা হয়। আমাজন জঙ্গলের এই অঞ্চলে কয়েক ডজন আদিবাসী বসবাস করে। তবে শিপিবোরা রোগমুক্তির জন্য প্রাচীন শামান প্রথা পালনের জন্য বেশ পরিচিত। এজন্য তারা আইহুয়াসকা নামের বিভিন্ন উদ্ভিদের তৈরি এক প্রকার মিশ্রণ ব্যবহার করে। এটি তাদের কাছে রোগ নিরাময়ের আধ্যাত্মিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 

পেরুর কেন্দ্রীয় আমাজন জঙ্গলের কেইমিতো অঞ্চলে শিপিবো আদিবাসীর জনসংখ্যা ৭৫০ জন তাদের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ জনগণের মধ্যে করোনাভাইরাসের লক্ষণ আছে। কেইমিতোতে জনগণ করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সরকার একজন চিকিৎসক এবং একজন করে নার্স এবং সহকারী নিয়োগ দিয়েছে। এই অঞ্চলে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়ার পর পার্যটকদের ভ্রমণ নিষেধ। তারপরও তাদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য একটি প্রতিনিধি দল যায়। নৌকা থেকে তাদের প্রবেশের সময় আদিবাসী যোদ্ধারা তীর ধনুক নিয়ে ঘেরাও করেছিল। তাদের সবার কাশি হচ্ছিল এবং অসুস্থ দেখাচ্ছিল। তবে স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস পেয়ে তারা প্রতিনিধি দলটিকে স্বাগত জানায়।

কেইমিতোর আদিবাসীরা প্রথমে ভাইরাসটি গুরুতর ভাবেনি। তাদের সচেতনতার অভাব ছিল। সামাজিক দূরত্ব ধারণাটিও বুঝতে পারেনি। ধীরে ধীরে সেখানে নিয়োগপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের সচেতন করে তোলার চেষ্টা করে। কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়। তাদের সচেতনতা বৃদ্ধির সঙ্গে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.