আতিথেয়তায় শীর্ষে আফগানিস্তান, রইলো আরো অজানা তথ্য

Odd বাংলা ডেস্ক:  আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামী প্রজাতন্ত্র আফগানিস্তান। ৬৫২ দশমিক ২৩০ বর্গ কিমি আয়তনের দেশটি বিশ্বের ৩৭তম জনবহুল দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার স্থলবেষ্টিত দেশটির রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর কাবুল। পশতু এবং দরি এখানকার সরকারী ভাষা। রয়েছে নিজস্ব মুদ্রা আফগান আফগানি।

দেশের আদি বা অধিবাসীদের আফগান বা আফগানিস্তানী বলা হয়। এর ছয়টি সীমান্তবর্তী দেশ রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, ইরান, পাকিস্তান এবং চীন। এশিয়ার ডালিমের জন্য আফগানিস্তান বিখ্যাত। 


প্রথম পর্বের পর...


> আফগানিস্তানকে জরথুষ্ট্রিয়ান ধর্মের উৎপত্তিস্থল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।


> আফগানিস্তানের দুটি সরকারী ভাষার মধ্যে পশতুকে জহির শাহের শাসনামলের শুরুতে আফগানিস্তানের জাতীয় ভাষা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তবে দরি (ফারসি) সরকারী ভাষা সবসময় সরকারী এবং ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহৃত হত।


> এখানকার আনুমানিক ৩৫ শতাংশ জনসংখ্যা পশতু এবং ৫০ শতাংশ জনসংখ্যা দরি ভাষায় কথা বলে। আর বাকিরা অন্যান্য বিভিন্ন ভাষায় কথা বলে। 


> আফগানিস্তানে ইসলাম একটি প্রভাবশালী ধর্ম, সংস্কৃতি শান্তি এবং একেশ্বরবাদের ধর্ম দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত।


> আফগানিস্তানে, শুক্রবার অধিকাংশ দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে, যা ইসলামী পবিত্র দিন বলে বিবেচিত হয়।


> আইনী, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনে আফগানদের ইসলামী আইন দ্বারা পরিচালিত হয়।


> রমজান মাসে রোজা রাখা এবং প্রার্থনা করা একটি বাধ্যতামূলক কাজ। তবে যারা বিদেশী, অসুস্থ, ভ্রমণ বা অন্যান্য বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে তাদের ব্যতীত।

 

> পরিবার আফগানিস্তানের সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। পুরুষদের উপার্জনের দায়িত্ব। অন্যদিকে নারীরা সামলাম ঘর সংসার। তবে আধুনিক আফগানিস্তানে, কিছু নারী শহরে কাজ করেন এবং পরিবারের জন্য জীবিকা উপার্জন করতে পারেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে একান্নবর্তী পরিবারে বাস করেন আফগানরা। তবে ছেলে বিয়ের পর আলাদা থাকতে পারেন।  

> আফগানিস্তান একটি বহুসংস্কৃতিক এবং বহু-জাতিগত দেশ। গত কয়েক বছরে, আনুমানিক ২ দশমিক ৬ মিলিয়ন আফগানরা তাদের নিজ দেশ ছেড়ে অন্যদের আশ্রয় চেয়েছিল। আতিথেয়তা এ দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দর্শনার্থীদের পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে বিবেচনা করেন তারা। চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান তারা যে কাউকে। এসময় একে অপরকে ছোট উপহার দিতে পারেন। যা তাদের সম্পর্ক আরো গাঢ় করে। 

> এখানকার সমাজে নারীরা অত্যন্ত সম্মানিত। বিবাহ বা সরাসরি পারিবারিক সম্পর্ক ব্যতীত বিপরীত লিঙ্গের সদস্যদের সঙ্গে নারীদের মেশার অনুমতি নেই।  নারীদের এমন পোশাক পরতে হবে যা তাদের বিনয়কে সম্মান করে এবং প্রকাশ করে না। আঁটসাঁট পোশাক এবং পশ্চিমা পোশাক এখানকার সমাজে  গ্রহণযোগ্য নয়। নারীদের জন্য মাথার স্কার্ফ বাঞ্ছনীয়। পুরুষ এবং নারীদের মধ্যে সরাসরি চোখের যোগাযোগ গ্রহণযোগ্যনয়। বরং একে অপরকে এড়িয়েই চলেন।

> হ্যান্ডশেক আফগানিস্তানে অভিবাদন জানানোর একটি বহুল প্রচলিত রূপ। তারা অন্যকে সম্মান জানাতে হ্যান্ডশেকের পর বুকে হাত রাখেন এবং সামান্য মাথা ঝোকান। তবে বিপরীত লিঙ্গের কারো সঙ্গে হাত মেলানোর অনুমতি নেই এখানে।

> আফগানরা সাধারণত মেঝেতে কাপড় বিছিয়ে তার উপর খাবার পরিবেশন করেন। খাবার খাওয়ার সময় ডান হাতের ব্যবহার করা আদর্শ। তবে কেউ চাইলে আলাদা থালায় খাবার নিয়ে খেতে পারেন। আফগানিস্তানে বিয়েকে একজনের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিবাহবিচ্ছেদ এখানে বিরল এবং সমাজে খুব বেশি গ্রহণযোগ্য নয়। বহুবিবাহ হয় অনুমোদনযোগ্য তবে বিরল। এখানে বেশিরভাগ বিয়ে হয় আত্মীয়ের মধ্যে। বিয়ের অনুষ্ঠান হয় তিনদিন ধরে বেশ জমকালো আয়োজনে। সেখানে একটি বিবাহ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং দম্পতি একত্রিত থাকার প্রতিজ্ঞা করেন।

> আফগানিস্তানে ৮০ শতাংশ সুন্নি মুসলিম, ১৯ শতাংশ শিয়া মুসলিম এবং বাকি ১ শতাংশ অন্যান্য। আফগানিস্তানে মানুষের গড় আয়ু ৫৩ দশমিক ২৫ বছর (২০২১)। আফগানিস্তানের জাতীয় ছুটি ১৯ আগস্ট। জাতীয় প্রতীক হচ্ছে সিংহ। এই দেশে শিক্ষার হার ৪৩ শতাংশ। আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ বিন্দু হচ্ছে নশাক (৭ হাজার ৪৯২ মিটার বা ২৪ হাজার ৫৮০ ফুট)। হেলমান্দ আফগানিস্তানের দীর্ঘতম নদী। আফগান পাটি সারা বিশ্বে খুবই জনপ্রিয়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.