সান্তা ক্লজ আসলে কে? তার বাড়ি কোথায়?

 


ODD বাংলা ডেস্ক:  বড়দিনের অন্যতম আকর্ষণ সান্তা ক্লজ। সান্তা ক্লজ বলতে আমরা যাকে চিনি, তিনি লাল রঙের পোশাক, চোঙা আকৃতির লম্বা টুপি পরা সাদা চুল-দাড়িওয়ালা এক বৃদ্ধ লোক। কিন্তু রহস্য হলো কে এই সান্তা? কোথা থেকে এলেন? কেমন করেই বা তার আবির্ভাব? কেনই বা ঘুরে ঘুরে বাচ্চাদের  মধ্যে উপহার বিতরণ করেন? কোথায় তার বাড়ি? এমন প্রশ্ন সবার মনেই রয়েছে।

খ্রিস্টানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। ডিসেম্বর মাস এলেই সারাবিশ্বে প্রস্তুত হয় বড়দিন উৎযাপনের জন্য। খ্রিস্টানদের বিশ্বাস অনুসারে, এই তারিখের ঠিক নয় মাস আগে মাদার মেরির গর্ভে প্রবেশ করেন যিশু। ২৪ তারিখ রাত ১২টা বাজলেই লাল সাদা পোশাকে ঝোলায় ভর্তি উপহার নিয়ে হাজির হোন সান্তা ক্লজ।


শুধুই কী রূপকথার গল্পের চরিত্র নাকি সত্যিই পৃথিবীতে আছেন সান্তা। যদি সত্যিই সান্তার দেখা পেতে চান তাহলে আপনাকে যেতে হবে ফিনল্যান্ড। হ্যাঁ, সেখানেই থাকেন সান্তা। বড়দিনের আগের রাতে বরফে ঢাকা চরম শীতের দেশ থেকে স্লেজগাড়ি চড়ে লোকালয়ে আসে সান্তা ক্লজ।


খ্রিষ্টীয় তিন শতকে সান্তা ক্লজের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। ওই সময় সান্তা হিসেবে নয়, সেন্ট নিকোলাস নামে এক বৃদ্ধ প্রত্যেক বাড়িতে হাজির হয়ে শিশুদের উপহার দিতেন। তুরস্কে জন্ম নেওয়া সেন্ট নিকোলাস প্রচুর সম্পত্তির অধিকারী ছিলেন। অসহায় মানুষদের যেমন তিনি সাহায্য করতেন, তেমনি শিশুদের কাছেও প্রিয় মানুষ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।


সান্তাকে নিয়ে কথিত রয়েছে আরো অনেক গল্প। এমন একটি কাহিনি হচ্ছে এই সেন্ট নিকোলাস তিন বোনকে বিক্রি হওয়া থেকে বাঁচিয়েছিলেন। অর্থের জন্য ওই তিন বোনকে যখন তার বাবা বিক্রি করতে যান, সেন্ট নিকোলাস গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। সেই থেকে এই সাদা দাঁড়িওয়ালা ব্যক্তি জনপ্রিয়তা লাভ করেন বলে জানা যায়। পরবর্তীকালে এই সেন্ট নিকোলাসই সান্তা ক্লজ হিসেবে পরিচিতি পান বলে জানা যায়।


হ্যা, ল্যাপল্যান্ডের রোভানিয়েমিতে সত্যিই বাড়ি রয়েছে সান্তার। কেবল বাড়ি নয়, সেখানে রয়েছে তার অফিস, নিজস্ব পোস্ট অফিস, এমনকি রেইন ডিয়ার অর্থাৎ বল্গা হরিণের ফার্মও। সান্তার বাড়ি সারাবছর বরফে মোড়া থাকে।


সান্তার এই বাড়ির ওপর দিয়ে চলে গিয়েছে কাল্পনিক আর্কটিক লাইন বা উত্তর মেরু রেখা। এজন্য বছরে একদিন (২২ ডিসেম্বর) এখানে সূর্যের ঘুমই ভাঙে না। আবার ২১ জুন তারিখটিতে চব্বিশ ঘণ্টাই দেখা মেলে সূর্যমামার।

শুধু সান্তার বাড়িই নয়, গোটা গ্রামের গাছপালা, মাঠ, রাস্তা, সবকিছুর উপরেই বিছিয়ে থাকে বরফের চাদর। সব মিলিয়ে যেন বড়দিনের কার্ডের ছবির মতোই সুন্দর এই গ্রাম। সান্তা ক্লজের নামেই এই গ্রামের নাম সান্তাক্লজ ভিলেজ।


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আমলে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ছবির মতো গ্রামটি। কিছু বছর পর একে ফের সাজিয়ে তোলা হয়। ফার্স্ট লেডি ইলিনর রুজভেল্টের উদ্যোগে উত্তর মেরুতে একটি কেবিনও তৈরি করা হয়। তবে সান্তা ক্লজের বাড়ি হিসেবে যথাযথ স্বীকৃতি পেতে এই গ্রামের সময় লেগেছে আরো অনেক দিন।


তবে বড়দিনের প্রতীকই কিন্তু সান্তা। যিশুর জন্মের এই দিনটিকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পালন করা হয় বেশ জাঁকজমক আয়োজনের মধ্য দিয়ে। প্রতি বছরই উজ্জ্বল লাল রঙের পোশাক পরে, মাথায় সাদা টুপিতে সাদা দাড়ির বুড়ো মানুষটা আসেন সবার মাঝে খুশি বিলিয়ে দিতে। তাইতো খ্রিষ্টধর্মের মানুষের কাছে শিশুদের রক্ষাকর্তা হিসেবেই পরিচিত হয়ে আছেন সান্তা।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.