বীরভূমে মকর সংক্রান্তির দিন পালিত হয় জয়দেব মেলা, জেনে নিন কী এই মেলার বিশেষত্ব

ODD বাংলা ডেস্ক: হিন্দু শাস্ত্রে, মকর সংক্রান্তির গুরুত্ব রয়েছে বিস্তর। এই দিন সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করে। এই দিন গঙ্গা স্নানের গুরুত্ব রয়েছে বিস্তর। এই দিন সূর্য দেবকে অর্ঘ্য দিয়ে থাকেন অনেকে। এই সময় আউনি বাউনি বাঁধা হয়ে থাকে। তেমনই ঘরে ঘরে পিঠে তৈরি হয়ে থাকে। বাঙালির এক উল্লেখযোগ্য উৎসব হল মকর সংক্রান্তি। এই সময় বিভিন্ন স্থানে মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এমনই বীরভূমের জয়দেব মেলা বেশ উল্লেখযোগ্য।

মকর সংক্রান্তির দিন পুণ্যস্নানের মাধ্যমে পালিত হয় জয়দেব মেলা। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার জয়দেব মেলা এক ঐতিহ্যবাহী মেলা হিসেবে পরিচিত। অজয় নদের পাড়ে ছোট গ্রামে জয়দেব মেলা পালিত হয়। বীরভূমের সংস্কৃত পণ্ডিত জয়দেবের স্মৃতি তর্পণ উদ্দেশ্যের এই মেলা পালিত হয়। নদীর পাড়ে বাউল আখড়া বসে এই মেলায়। প্রতি বছর এই সময়টার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন বাউলপ্রেমীরা। মকরস্নানের দিন থেকেই শুরু হয় গান-বাজনা, মেলা ও উৎসব। কেন্দুলি গ্রামে গীতগোবিন্দে রচয়িতা কবি জয়দেবের জন্মস্থান। লক্ষণসেনের সভাকবি ছিলেন তিনি। তিনিই রাধামাধব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। সেই মেলাতেই হয়ে থাকে জয়দেব মেলা।

অজয় নদে মকর সংক্রান্তির দিন জয়দেব মেলা বসে। বীরভূম বর্ধমান জেলার সীমান্ত বরাবর বয়ে চলে অজয় নদ। তার ধারে এই কেন্দুলি গ্রাম। সেখানে রাজা লক্ষণ সেনের সভাকরি জয়দেবের বাড়ি। যা বর্তমানে জয়দেব মেলার জন্য খ্যাত। একবিংশ শতকে সেই মেলায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হত। বর্তমানেও সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় জয়দেব মেলা।

এই মেলার আরও এক বৈশিষ্ট্য হল বাউল মেলা। কথায় আছে, জয়দেব মেলা মানেই বাউল গানের আসর। সেই সঙ্গে অবশ্যই কীর্তন হয় এখানে। প্রতি বছর এই মেলায় তৈরি করা হয় কীর্তনীয়াদের জন্য কীর্তনের আখড়া ও বাউলের আখড়া। প্রায় ৩০০ টি আখড়া তৈরি করা হয় মেলায়। এই বাউল গানের জন্য এই মেলা বেশ উল্লেখযোগ্য। বীরভূম জেলার জয়দেব মেলা দেখতে বহু মানুষের সমাগম ঘটে থাকে।

পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি বাঙালির এই বিশেষ উৎসব। বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিন এই উৎসব পালন করা হয়। এদিন সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করে, তাই এটি মকর সংক্রান্তি বা উত্তরায়ণ নামে পরিচিত। সব মিলিয়ে এই উৎসবের রয়েছে  এক আলাদা ও বিশেষ মাহাত্ম্য। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.