সামুরাই যোদ্ধা, যাঁরা যুদ্ধে হেরে গেলে নিজেই আত্মহত্যা করত


Odd বাংলা ডেস্ক: সামুরাইরা এই আত্মহত্যাকে খুব সম্মানের চোখে দেখতেন। মাঝে মাঝে তারা এ আত্মহত্যার একটি অনুষ্ঠানও পালন করতেন। অনুষ্ঠানটির নাম হারা-কিরি বা সেপ্পুকু। এ অনুষ্ঠানে পরাজিত ব্যক্তি জনসমুক্ষে আত্মহত্যা করতে ৭১০ সাল থেকে সামুরাইদের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়। ধারণা করা হয় তাদের উৎপত্তিও সে সময় থেকে। তারা জাপানের তোহুকু নামক অঞ্চলে বসবাস করতেন। সামুরাই জনগোষ্ঠীর সৃষ্টির পর থেকেই যুদ্ধ বিদ্যায় খুব সুনাম অর্জন করেন। শতাব্দীর পর শতাব্দী যুদ্ধবিদ্যার সঙ্গে থেকে এক সময় জাতীয় যোদ্ধাতে পরিণত হয়। এক সময় জাপান সরকার তাদের জাতীয় যোদ্ধার সন্মানে সম্মানিত করেন। তারা ১২ শতাব্দী থেকে ১৯ শতাব্দী পর্যন্ত জাপানের শাসকশ্রেণীর সঙ্গে ছিলেন।

একজন সামুরাই বিভিন্ন অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করতে পারদর্শী ছিলেন। তার মধ্যে ‘কাতানা’ নামের এক ধরনের লম্বা তলোয়ার খুব প্রিয় ছিল তাদের কাছে। তারা ডান হাতে অস্ত্র ধরতেন। সবসময় দুটি তলোয়ার নিজের কাছে রাখতেন। কোন যুদ্ধ না থাকলে না ‘কাতানা’ এবং ‘ওয়াকিজাশি’ নামক ছোট তলোয়ার দুটি সঙ্গে রাখতেন। তাছাড়া যুদ্ধের সময় ‘তাচি’ নামের লম্বা তলোয়ার এবং ‘টান্তো’ নামের ছোট তলোয়ার সঙ্গে রাখতেন। সামুরাইরা বিশ্বাস করতেন তলোয়ারই তাদের আত্মাকে ধারণ করে আছে। তাই তলোয়ারই তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তারা মনে করতনে তলোয়ারকে উপযুক্ত সম্মান না করলে নিজের সম্মানও থাকবে না।

১৫-১৬ শতাব্দীর দিকে সামুরাইরা ভয়ঙ্কর যোদ্ধা ছিলেন। তারপরই শুরু হয় এডো যুগ। এডো যুগ ছিল ১৬০৩ সাল থেকে ১৮৬৮ সাল পর্যন্ত। এই এডো যুগ থেকেই সামুরাইয়ের শক্তি কমতে শুরু করে। যুদ্ধ বিগ্রহও কমতে থাকে। জাপানে শান্ত পরিবেশ বিরাজ করা শুরু করে। বিখ্যাত বিখ্যাত সামুরাই যোদ্ধারা যুদ্ধপেশা ত্যাগ করে শিক্ষক, শিল্পী ও সরকারের বিভিন্ন আমলার চাকরি নেওয়া শুরু করেন। এভাবে সামুরাইদের সংখ্যা কমে ১৮৬৮ সালে পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যায়।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.