বাড়ির এই জিনিসগুলিতে করোনা ভাইরাস সবচেয়ে বেশিদিন বাঁচে


Odd বাংলা ডেস্ক: ৯টি জিনিসে বেশি দিন বাঁচে- বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করো’না ভা ইরাস মানুষের শ রীরের বাইরে ৯টি জিনিসের ওপর বেশি দিন বাঁচে বলে জানিয়েছে বিজ্ঞানীরা। কোনো রো গী সেই সব বস্তুর সংস্প র্শে এলে কতদিন পর্যন্ত সেই সব বস্তু থেকে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত তা নিচে দেয়া হল…
১. প্লাস্টিক: করো’নাভাইরা স সবচেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে পলিপ্রোপিলিন নামক এক ধরনের প্লাস্টিকের উপর। পাঁচদিন পর্যন্ত এর উপর বেঁচে থাকতে পারে করো’নাভাইরা স। এই ধরনের প্লাস্টিক দিয়েই শিশুর খেলনা থেকে শুরু করে প্লাস্টিকের টিফিন বক্স তৈরি করা হয়।
২. কাগজ: কাগজের উপর করো’নাভাইরা স বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে। তবে গবেষকরা জানিয়েছেন, খবরের কাগজ থেকে কোনোভাবেই এই ভাইরা স ছড়াতে পারে না। খবরের কাগজের মাধ্যমে এই সং ক্রমণ ছড়ানোর কোনো আশ ঙ্কাই নেই। সংবাদপত্রের প্রক্রিয়াকরণের সময়ে যেসব রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তার উপরে ড্রপলেটের বেঁচে থাকা অসম্ভব। তবে গবেষকেরা জানিয়েছেন, খবরের কাগজ ছাড়া অন্যান্য কাগজের উপর ৪-৫ দিন বেঁচে থাকতে পারে করো’নাভাইরা স।
৩. কাঁচ: কাঁচ এবং তা দিয়ে বানানো জিনিসের উপর করো’না ভাইরা স বেশি দিন বাঁচতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, কাচ জাতীয় কোনো পৃষ্ঠদেশের উপর অন্তত চারদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে করো’নাভাইরা স।
৪. কাঠ: কাঠের বস্তুর উপর এই ভাইরা স চারদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তাই গবেষকেরা জানাচ্ছেন, কাঠের কোনো বস্তুতে হাত দিলে, তারপরই যেন কোনোভাবেই হাত মুখে বা নাকে না যায় এবং ভালো করে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা জরুরি।
৫. স্টেইনলেস স্টিল: স্টেইনলেস স্টিলের উপর করো’নাভাইরা স বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, স্টেইনলেস স্টিলের উপর এই ভাইরা স ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। কোনো আ ক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে যদি করো’নাভাইরা সের জী বাণু কোনো স্টিলের উপরে পড়ে, তাহলে ৪৮ ঘণ্টা পরও তা থেকে ভাইরা’স ছড়াতে পারে।
৬. সার্জিক্যাল গ্লাভস: প্রধানত চিকিৎ সকেরা সার্জি’ ক্যাল গ্লাভস ব্যবহার করে থাকেন। আর হাস পাতালে এখন সমস্ত করো’নাভাইরা স আ ক্রান্ত রো গীদের ভিড়। পাশাপাশি অন্যান্য রো গীরাও সেখানেই রয়েছেন। রয়েছেন তাদের বাড়ির লোকজনও। তাই সার্জি ক্যাল গ্লাভস ব্যবহারে ভীষণভাবে সুরক্ষা-বিধি মেনে চলা প্রয়োজন। কা রণ সার্জি ক্যাল গ্লাভসের উপর এই ভাইরা স অন্তত চার ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। সুরক্ষা-বিধি মেনে না চললে, সেখান ছড়ানোর সম্ভাবনাও খুব বেশি।
৭. অ্যালুমিনিয়াম: যেসব ধাতব বস্তু নিয়ে গবেষণা চালানো হয়েছে তার মধ্যে আর একটি হল অ্যালুমিনিয়াম। গবেষকরা জানাচ্ছেন, অ্যালুমিনিয়ামের উপর এই ভাইরা স দু’ঘণ্টা থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তবে ‘ন্যা কেড’ বা ন গ্ন ভাই রাস কোনো বস্তুর উপরেই বাঁচতে পারে না। এদের টিকে থাকার জন্য হাঁচি বা কাশির ড্রপলেট তথা তরল বিন্দুর প্রয়োজন হয়। অ্যালুমিনিয়াম জাতীয় পদার্থের উপর যদি এই ড্রপলেট পড়ে, তবেই তা সং ক্রমণযোগ্য।
৮. তামা: সম্প্রতি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে তামার উপর এবং বাতাসে এই ভাইরা স কতদিন বাঁচতে পারে, তা প্রকাশ করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, তামার উপর চার ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে এই করো’নাভাইরা স।
৯. বাতাস: বাতাসে মাত্র তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে করো’নাভাইরা’স।
নির্মূলের উপায়: গবেষণায় দেখা গেছে করো’নাভাইরা সকে এক মিনিটেই নিষ্ক্রিয় করে ফেলা যেতে পারে। ৬২-৭১% এলকোহল মিশ্রিত তরল পদার্থ দিয়ে কোনো জিনিসকে করোনামুক্ত করা যায়।
০.৫ শতাংশ হাইড্রোজেন প্রিঅক্সাইড এবং ০.১% সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট মেশানো ব্লিচ দিয়েও করো’না ভাইরা’স নির্মূল করা সম্ভব। উচ্চ তাপমাত্রা ও আদ্রতার কা রণেও অন্যান্য করোনা ভাইরা সের দ্রুত মৃ ত্যু হতে পারে।
দেখা গিয়েছে সার্সের জন্যে দায়ী করোনা ভাইরা স ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় বেঁচে থাকতে পারে না।
কতোক্ষণ বাঁচে করোনার জীবাণু: বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোভিড-১৯ এর জন্যে দায়ী ভাইরা সটি কতক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে তা নির্ভর করে এটি কোনও ধরনের বস্তুর গা য়ে পড়েছে তার ওপর। দরজার শক্ত হাতল, লিফটের বাটন এবং কিচেন ওয়ার্কটপের মতো শক্ত জিনিসের গায়ে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা টিকে থাকতে পারে। তবে এর আগের গবেষণায় দেখা গেছে সহায়ক পরিবেশে সব ধরনের করো’না ভাইরা স এক সপ্তাহও বেঁচে থাকতে পারে।
কাপড়ের মতো নরম জিনিসের গা য়ে এটি এতো লম্বা সময় বেঁচে থাকতে পারে না। ফলে আপনি যে কাপড়টি পরেছেন এবং তাতে যদি ওই ভাইরা সটি থাকে, জামাটি একদিন কিম্বা দুদিন না পরলে সেখানে ভাইরা সটি জীবিত থাকার আর সম্ভাবনা নেই।
মনে রাখতে হবে, কোভিড-১৯ এর ভাইরা সটি লেগে আছে এরকম জিনিসে শুধু স্প র্শ করলেই আপনি আ ক্রান্ত হবেন না। শুধু স্প র্শ করার পর আপনি যদি হাত দিয়ে মুখ, নাক অথবা চোখ স্প র্শ করেন তাহলেই এই ভাইরা সটি আপনার শ রীরে ঢুকে পড়বে।
এতএব করোনা ভাইরা স থেকে মুক্ত থাকার সবচেয়ে বড় উপায় হচ্ছে- বারবার হাত দিয়ে নাক, মুখ, চোখ স্প র্শ না করা। মহামা রির এই দুঃসময়ে এসব ব্যাপারে নিজে সচেতন থাকুন, নিজেকে নিরাপদে রাখতে পাশের জনকেও সচেতন করুন।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.