সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ভারতে লকডাউন তুলে দিলে যে যে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে দেশ


ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়, Odd বাংলা: ভারতের ডুবতে থাকা আর্থিক পরিস্থিতির পুনরুদ্ধার করতে করোনাভাইরাসের কারণে চলতে থাকা লকডাউন তুলে দেওয়ার পক্ষেই সওয়াল করছেন অনেকে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সাম্প্রতিক পরিস্থিতি অনুধাবন করে জানিয়েছেন, এটা লকডাউন তুলে দেওয়ার জন্য সঠিক সময় নয়। তবে এই বিপুল আর্থিক ক্ষতির বিষয়টি পর্যালোচনা করেই লকডাউন তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী অনেকে। 

গত সপ্তাহে দিল্লি সরকারের তরফে লকডাউন তুলে দেওয়াই সঠিক বলে মত পোষণ করেছিল। সেইসঙ্গে অন্যান্য রাজ্যও লকডাউন শিথিল করার কথাই ভাবছে। এছাড়াও যেসব রাজ্যে করোনামুক্ত এবং করোনা সংক্রমণের হার কম, তারাও লকডাউন শিথিল করে দেওয়ার কথা ভাবছে। কিন্তু সমস্যাটা অন্য জায়গায়, প্রতিদিন রেকর্ড সংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, সেইসঙ্গে মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। ভারতে ১১ মে সকাল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ হাজার ছাড়িয়েছে, যা মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসার কোনও সংকেত দিচ্ছে না, বরং ঝুঁকি আরও বাড়ছে বলেই আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই পরিস্থিতিতে লকডাউন তুলে নেওয়া যে একটা বিরাট ভুল সিদ্ধান্ত হবে তার উদাহরণ হল জাপানের হোক্কাইডো। 


ভারতে যেখানে আর্থিক ক্ষতির বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে লকডাউন তোলার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে হোক্কাইডোতে সেরকম কোনও সমস্যা ছিল না। তারা প্রধানত সংক্রমণের হারের ওপর নির্ভর করে লকডাউন তোলার পক্ষে ছিল। টানা ৩ সপ্তাহ লকডাউন থাকার পর কর্তৃপক্ষের তরফে লকডাউন শিথিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু মাত্র ২৬ দিন পর যা দেখা গেল তা মারাত্মক। মারাত্মক বারে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে করোনা সংক্রমণ। যার ফলে তড়িঘড়ি ফের বিধিনিষেধ বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেয় হোক্কাইডো। 

হোক্কাইডোতে এই দ্বিতীয় দফার লকডাউন কার্যকর হওয়ার পর হোক্কাইডোকে করোনার কেস ৮০% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতরাং এইরকম একটা পরিস্থিতিতে যদি লকডাউন তুলে দেওয়া হয়, তাহলে সংক্রমণ অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে যাওয়ার একটি সম্ভাবনা থাকছেই। ভারতের জনঘনত্ব এবং ভ্যাকসিন তৈরির সময়সীমা বিবেচনা করে এই মুহূর্তে লকডাউন তুলে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কার্যতই ধন্দ তৈরি হবে। তবে সবটা বিবেচনা করে দেখলে বোঝাই যাচ্ছে যে, এই পরিস্থিতিতে লকডাউন তুললে পরোক্ষভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য তথা ভারতীয় অর্থনীতির আরও বেশি ক্ষতি হবে।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.