সত্যিকারের মা অন্নপূর্ণা, আটকে থাকা শ্রমিকদের খাওয়াচ্ছেন ১ টাকায় ইডলি, মাতৃ দিবসে তাঁকে প্রণাম



Odd বাংলা ডেস্ক: বয়স ভারে আজ তিনি কুঁজো হয়েছেন। কিন্তু তার ইচ্ছা শক্তি আজও অদম্য। বলিরেখায় শীর্ণ হাত আঁচ দেয় উনুনে। যেমন দিয়ে আসছে গত দু’দশক ধরে। ওই আঁচে তৈরি হয় ইডলি, সম্বর, চাটনি। দাম মাত্র এক টাকা! অবিশ্বাস্য মনে হলেও গত কুড়ি বছর ধরে এই দাম অপরিবর্তিত। সুযোগ থাকলেও এর বেশি উপার্জন করতে চান না কমালাথল। বরং, তাঁর ইচ্ছে এ ভাবেই বুভুক্ষু দরিদ্র মানুষের সামনে নামমাত্র মূল্যে খাবার পরিবেশন করা। কোয়ম্বত্তূরের এই অশীতিপর এখন জয় করেছেন সোশ্যাল মিডিয়া। লকডাউনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। দীর্ঘ দিন আটকে থাকতে থাকতে আর টাকা পয়সা নেই তাঁদের পকেটে। তাই রোজকার খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। সেই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতেই পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এক বৃদ্ধা। তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোরের ৮৫ বছরের কমলাথল এখন যেন মা অন্নপূর্ণা। ‌কারণ, মাত্র এক টাকায় ইডলি বিক্রি করছেন তিনি। গত তিরিশ বছর ধরে তিনি এক টাকাতেই ইডলি বিক্রি করেন। কিন্তু লকডাউনের পর থেকে সেই একই দামে জিনিস বিক্রি করা অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল। তবু মানুষের পাশে থাকা অঙ্গীকার নিয়ে তিনি দাম বাড়াননি। সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‌লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে সত্যিই ভীষণ অসুবিধায় পড়েছি। কিন্তু চোখের সামনে দেখেছি, কীভাবে হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক আটকে পড়েছেন। তাঁদের খাবার নেই। যদি কম টাকায় খাবার পান, তাহলে তাঁদের পেট ভরবে। বেঁচে থাকতে পারবেন তাঁরা। লকডাউনের পর থেকে তাই দেখছি, অনেকে আসছেন দোকানে। আমি ওঁদের পেট ভরাতে তাই কষ্ট করে হলেও একটাকায় বিক্রি করছি ইডলি। 

 গতবছর কমলাথল এই এক টাকায় ইডলি বিক্রির জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিলেন। সেই সময় অনেকেই তাঁকে কম টাকায় বিক্রিতে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন। তবে শুধু ইডলি নয়, এক টাকায় সঙ্গে সম্বর, ডাল সবই দেন তিনি।

প্রতি দিন ভোর সাড়ে ৫টায় উঠে ইডলি বানাতে বসেন কমলাথল। চলে দুপুর অবধি। দৈনিক গড়ে বিক্রি করেন ৪০০ থেকে ৫০০ ইডলি। লাভ হয় গড়ে ২০০ টাকা। ইচ্ছে থাকলেই হতে পারতেন বিত্তবান ব্যবসায়ী। কিন্তু তা হতে চাননি তিনি। বরং, যৎসামান্য মূল্যে খাবার পরিবেশনেই তাঁর আনন্দ।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.