অক্সিজেন সাপোর্ট নিয়েও পরীক্ষা দিয়ে তাক লাগাল স্কুলছাত্রী



Odd বাংলা ডেস্ক: উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা সাফিয়া জাভেদ। ছোট থেকেই ফুসফুসের জটিল অসুখে আক্রান্ত। ফুসফুসের অপারেশন করেও লাভ হয়নি। তবু ডাক্তার ওষুধ আর ইঞ্জেকশনের মধ্যে নিজের জীবন আটকে যেতে দেয়নি সাফিয়া। অক্সিজেন সাপোর্ট নিয়েও পরীক্ষা দিয়ে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় তাক লাগানো নম্বর পেয়েছে সাফিয়া জাভেদ। ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত পাঁচ বছর ধরে ফুসফুসের অসুখে ভুগছে উত্তর প্রদেশের বরেলির বাসিন্দা সাফিয়া জাভেদ। উত্তর প্রদেশ বোর্ডের দশম শ্রেণির পরীক্ষায় অক্সিজেন সিলিন্ডার সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় বসেছিল সে। সেই অবস্থায় পরীক্ষা দিয়েও ৬৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছে সাফিয়া। ১৬ বছরের ওই ছাত্রী ড্রয়িং-এ পেয়েছে ৮২, ইংরেজিতে পেয়েছে ৭৭ এবং সমাজ বিজ্ঞানে পেয়েছে ৬৮। পড়াশোনা করতে পারলেই সাফিয়ার শরীর ভালো থাকে বলে জানিয়েছেন তার বাবা। তাঁর তিন সন্তানের মধ্যে সাফিয়াই সবার বড়। দুর্বল ফুসফুসের কারণে নিয়মিত কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হয় সফিয়াকে। গত কয়েক মাস ধরে অুসুস্থতার কারণে বিছানা ছেড়েই উঠতে পারেনি সাফিয়া। তার মধ্যে সাফিয়ার তাক লাগানো রেজাল্ট রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছে। 

 নয়ডার একটি বেসরকারি কম্পানিতে কাজ করেন সাফিয়ার বাবা সারভার জাভেদ। পরীক্ষার সময় মেয়ের পাশে থাকতে অফিস থেকে ছুটি নিয়েছিলেন তিনি। গলব্লাডার অপারেশন করার পর থেকেই সাফিয়ার শরীর ভেঙে যায় বলে জানিয়েছেন তিনি। টিউবারকিউলোসিসের জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিত্সা চলছে তার। মাঝে মাঝেই সাফিয়ার ফুসফুসে পানি ভরে যায়। সাফিয়াকে নিয়মিতভাবে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন ডাক্তাররা। জীবনের এই কঠিন লড়াইয়ে সাফিয়ার বাবা-মা যেভাবে তাকে সাহায্য ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, তা সচরাচর দেখা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন সাফিয়ার কাকা জাবি আহমেদ। বাবা-মার কারণেই এই লড়াই চালিয়ে যেতে পারছেন বলে মন্তব্য করেছেন সাফিয়াও। এভাবে কতদিন সাফিয়ার ব্যয়বহুল চিকিত্সা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে, তা নিয়ে সন্দিহান তার পরিবারের লোকেরা। পড়াশোনায় ভালো হলেও কতদিন সাফিয়া শারীরিক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে তা চালিয়ে যেতে পারবে, তা নিয়েও সন্দেহ আছে বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের লোকেরা। তবে সাফিয়া সে সব নিয়ে ভাবতে নারাজ। দশম শ্রেণির পর আরো পড়াশোনা করতে চায় সে। শারীরিক কষ্টকে ভুলেই জীবনে নিজের পায়ে দাঁড়াতে বদ্ধপরিকর সাফিয়া।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.