মহামারিতে মৃত্যু হল ঠাকুরবাড়ির ছোট্ট মেয়েটার! মানুষগুলোকে বাঁচাতে পথে নামলেন রবীন্দ্রনাথ!

Odd বাংলা ডেস্ক: বিংশ শতকের গোড়ার দিকের কথা। কলকাতায় তখন চাপা আতঙ্ক! চারিদিকে হাহাকার! আর্তনাদ! কিসের জানেন? মৃত্যুর!

কলকাতা-সহ নানা প্রান্তে তখন প্লেগের দাপট। একজন সুস্থ মানুষও প্লেগ আক্রান্ত হয়ে মুহূর্তের মধ্যে মারা যাচ্ছেন। এত মানুষের চিকিৎসার পরিষেবাও যে নেই। চিন্তায় পড়লেন রবীন্দ্রনাথ। ভাবলেন, কিছু একটা করতেই হবে। রক্ষে করতে হবে নিরীহ মানুষগুলোকে।

যেমন ভাবনা, তেমনই কাজ। শুরু করে দিলেন প্লেগ হাসপাতাল তৈরির কাজ। রবীন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথের সঙ্গে এই উদ্যোগে যুক্ত হলেন ভগিনী নিবেদিতাও।

সেই ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যেও মাঠে নেমে পড়লেন সবাই। শুরু হল সমস্ত পাড়ায় গিয়ে পর্যবেক্ষণ। অবন ঠাকুর-নিবেদিতার সঙ্গে তখন থাকত ডাক্তার-নার্স; আর চুন।

অসহায় মানুষগুলোকে যে যেভাবেই হোক সামাল দিতে হবে। প্লেগের হাত থেকে রক্ষা পায়নি জোড়াসাঁকোও। প্রথমে তো বাড়ির দুজন মেথর প্লেগ আক্রান্ত হন।

তারপর কাকা রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে যখন মহা উৎসাহে কাজ করছিলেন অবন ঠাকুর, তখনই ঝড় এল নিজের ঘরে। প্লেগে ধরল অবন ঠাকুরের দশ বছরের ছোট্ট মেয়েকে! প্রাণটাও নিয়ে চলে গেল তার।

নিজের প্রিয় মেয়ের চলে যাওয়ার দুঃখে একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন অবন ঠাকুর। জোড়াসাঁকো ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন চৌরঙ্গী। দুঃখ ভোলাবার অনেক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুঃখ কিছুতেই যে যায় না!

এভাবেই প্রতিটি বাড়িতে নির্বিচারে আঘাত রেখে গেছে প্লেগ। রাস্তার হতদরিদ্রের ঘর হোক, বা জমিদারবাড়ি— সব জায়গায় তখন মৃত্যুর আওয়াজ।

যে আওয়াজে কেঁপে উঠেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। যে আওয়াজে হারিয়ে গিয়েছিল অবনীন্দ্রনাথের ছোট্ট মেয়েটিও।  

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.