পুত্র সন্তান জন্মালেই পিতার হাতে খুন হতে হয় নির্মমভাবে

Odd বাংলা ডেস্ক: সন্তানের কাছে বাবা মা তার একমাত্র নিরাপদ আশ্রয়স্থল। শত বিপদ থেকে নিজের সন্তানকে বাঁচাতে বুকে আগলে রাখেন তারা। নিজের জীবন বিপন্ন করে হলেও সন্তানকে রক্ষা করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। তবে যদি বলি সন্তানের জন্য বাবা-মা যখন বিপদজনক। তাহলে নিশ্চয় আপনার কপালের ভাঁজ দীর্ঘ হবে। বিচিত্র এই পৃথিবীতে রয়েছে নানা রকম প্রাণী যারা নিজেদের অস্তিত্বের লড়াইয়ে প্রতিপক্ষ মনে করে নিজের সন্তানকেই। তেমনি বিশ্বকে হতবাক করার মতো বৈশিষ্ট্য রয়েছে পুরুষ জলহস্তীর। 

জলহস্তী পরিবারে ২৪৩ দিন গর্ভধারণের পর একটা শিশু জলহস্তীর জন্ম। তবে কন্যা সন্তান হলে কোনো সমস্যা নেই। তাকে খুব আদর সোহাগেই বড় করে সবাই। ছেলে সন্তান হলেই বাড়ে যত বিপত্তি। পিতার হাতে ছেলে খুন। এমন ভাবনায় পরিবারের বাকি সদস্যরা সন্তানকে সারাক্ষণ পাহারায় রাখে, যাতে বাবা তার সন্তানকে হত্যা করতে না পারে। আর বাবা সারাক্ষণই সুযোগ খুঁজে বেড়ায়। একটা ছোট সুযোগই যথেষ্ট; বাবার বিশালাকৃতি মুখের ১ ফুট লম্বা তীক্ষ্ণ দাঁতের আঘাতে সন্তানকে হত্যা করার জন্য। 

কিন্তু বাবার হাতে ছেলে খুনের কেনো এই নৃশংসতা? ডাঙ্গায় থাকা প্রাণীদের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম প্রাণী হচ্ছে জলহস্তী। তৃণভোজী এই প্রাণীর ওজন, ১৩০০-১৮০০ কেজি পর্যন্ত হয়। এদের এক একটি দলে ৬-১০ টি পর্যন্ত সদস্য থাকে। যাদের মধ্যে একটিই মাত্র পুরুষ সদস্য। বাকিসব নারী সদস্য। পুরুষ সদস্যটি তার হেরেমে কখনো অন্য পুরুষকে আশ্রয় দিতে চায়না। কারণ, সে কখনো তার রাজত্ব হাতছাড়া করতে চায়না। পরিবারে কন্যা সন্তানের জন্ম হলে পরম মমতায় সে বড় হয়। আর ছেলে সন্তানের জন্ম মানেই তার রাজত্বের জন্য হুমকি। তাই পুরুষ সদস্যটি সুযোগ পেলে ছেলে জন্মের পরপরই হত্যা করে ফেলে। তবে ছেলে সন্তানটি যদি বাবার পায়ে পড়ে বশ্যতা স্বীকার করে, তখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাবা তাকে হত্যা করে না। তবে সবসময়ই সতর্ক থাকে। রাজ্যের জন্য হুমকি মনে হলে মৃত্যু ব্যতিত অন্য কোনো পথ নেই।

তবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ছেলে সন্তানটিকে লুকিয়ে বড় করার চেষ্টা করে। তবে সেজন্য ২৪ ঘন্টাই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। এক সময় সন্তান যখন পরিনত হয়, তখন সে বাবার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। তখন পিতা ও সন্তানের মাঝে জীবন মরন লড়াই হয়। সেখানে মৃত্যু বা পরাজয় বরণ করে মৃতপ্রায় হয়ে দলত্যাগ ব্যাতিত ভিন্ন কোন সুযোগ নেন। প্রকৃতিতে আরো কিছু প্রাণীদের মধ্যে এই প্রবণতা দেখা গেলেও জলহস্তীদের মধ্যে এর প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.