চাঁদে জমি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায়, বৈধভাবে কিনবেন যেভাবে

Odd বাংলা ডেস্ক: নিয়ম করেই প্রতিনিয়ত পৃথিবীর আকাশে চাঁদ ওঠে। কোটি বছরের আদি থেকে এই চাঁদ মানুষের জীবনে প্রভাব রাখে জোয়ার-ভাটায়, আনন্দ-বেদনায়। চাঁদের দিকে চেয়ে বিচিত্র মায়ায় আলোড়িত হয় হৃদয়- কখনও-বা চাঁদ বিভিন্ন দার্শনিক ভাবনায় নিক্ষেপ করে চিন্তাশীল মানুষকে। ভাবুন তো, সেই চাঁদে আপনার একখানা জমি আছে!

চাঁদের জমির মালিক হওয়াটা এখন স্বপ্ন নয়, বাস্তবেই দলিল নিয়ে ঘুরছেন অনেকে। প্রতি একর জমির দাম শুরু ২৫ মার্কিন ডলার বা বাংলাদেশি প্রায় ২ হাজার টাকা। এটি আইনত বৈধ; দলিল, মৌজা-পরচার মতো আইনি নথিও আছে।

কে বিক্রি করে চাঁদের জমি?

চাঁদে জমি বিক্রি করে মার্কিন নাগরিক ডেনিস হোপের সংস্থা ‘লুনার অ্যাম্বাসি’। যার বাংলা অর্থ চন্দ্র দূতাবাস। তবে চাঁদের মালিকানা ‌কিন্তু হোপের। এই সংস্থাটিই তার এসব জায়গাজমির ‘দেখভাল’ করে। লুনার অ্যাম্বাসির সিইও হোপ নিজেই। যদিও এই সিইও'র অর্থ সেলেশ্চিয়াল এগজিকিউটিভ অফিসার। এর বাংল‌া অর্থ মহাজাগতিক বিশেষ অধিকর্তা।

চাঁদের জমির ব্যবসার বুদ্ধি এবং রসদ দুই-ই হোপ পেয়েছিলেন তার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জ্ঞানের দৌলতে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের আনা একটি প্রস্তাবের ফাঁকফোকরই সাহায্য করেছিল হোপকে। জাতিসংঘ বলেছিল, বিশ্বের কোনো দেশ বা কোনো দেশের সরকার সৌরজগতের কোনো মহাজাগতিক বস্তুর উপর নিজেদের অধিকার, মালিকানা বা আইনি সত্ত্ব দাবি করতে পারবে না। ১৯৬৭ সালে আনা ওই প্রস্তাবে পৃথিবীর প্রায় সবক’টি দেশ সম্মতি দিয়েছিল।

ওই প্রস্ত‌াবের ফাঁক‌ফোকর হচ্ছে, যেকোনো ব্যক্তি এই দাবি করতে পারবেন না, এমনটা কোথাও উল্লেখ নেই। হোপ ওই অসম্পূর্ণতাকে কাজে লাগিয়েই চাঁদের মালিকানা দাবি করেন। এমনকি জাতিসংঘের কাছে চিঠিও পাঠান। এর বিপরীতে তিনি কোনো উত্তর পাননি। বরং তিনি ধরেই নিয়েছেন, মৌনতা সম্মতির লক্ষণ।

নামী-দামি ক্রেতা

বিশ্বজুড়ে ৬০ লাখেরও বেশি ক্রেতাকে চাঁদের ৬১.১ কোটি একর জমি বিক্রি করেছেন হোপ। এর মধ্যে ৬৭৫ জন নামী তারকা তার কাছ থেকে জমি কিনেছেন বলে জানিয়েছেন হোপ। ক্রেতাদের মধ্যে নাকি তিন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ, জিমি কার্টার ও রোনাল্ড রিগ্যানও রয়েছেন বলে দাবি করেছেন হোপ। এছাড়া ম্যারিয়ট হিলটনের মতো বেশ কিছু হোটেলও জমি কিনেছে তার কাছ থেকে।

ক্রেতার ব্যাপারে কোনো বাছবিচার নেই এই হোপের। তারকা থেকে সাধারণ চাকুরিজীবী— সবাই রয়েছেন তার ক্রেতার তালিকায়। তার দাবি, চাঁদের জমির চাহিদা ভালই। এমন নাকি অনেকেই আছেন যারা জমি কিনতে বার বার ফিরে আসেন তার সংস্থায়।

কত দাম, কীভাবে কিনতে হয়

হোপ জানিয়েছেন চাঁদের সবচেয়ে বৃহদাকৃতি জমির অংশটিতে ৫৩ লাখ ৩২ হাজার ৭৪০ একর জায়গা আছে। যদিও সেই জমির ক্রেতা এখনও পাননি হোপ। বেশি চাহিদা ১৮০০-২০০০ একরের জমিগুলোর।

এসব জমির দাম রাখা হয়েছে সাধারণের আয়ত্তের মধ্যেই। ২৪.৯৯ মার্কিন ডলার থেকে শুরু হয়ে হোপের বিক্রি করা একর প্রতি চাঁদের জমির দাম। শেষ ৫০০ ডলারেই। বেশি দামেরও জমি আছে। এক একটি মহাদেশের সমান সেই জমির দাম প্রায় ১৪ কোটি ডলারের কাছাকাছি। জমি কিনতে চাই সরাসরি অফি‌সে যে‌তে হ‌বে। এছাড়া তাদের ও‌য়েবসাইটেও যোগাযোগ করা যাবে।

জমি যেমনই হোক, একটি বিষয় নিশ্চিত করেছেন হোপ, সব জায়গা থেকেই পৃথিবীকে সমান ভাবে দেখা যাবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.