মৃত্যুর পর বোন ফিরেছে বিড়ালবেশে, তাই ভাই যা করলেন..

Odd বাংলা ডেস্ক: ভাই-বোনের সম্পর্কই যেন অন্যরকম। মারামারি, ঝগড়াঝাটি যেমন লেগেই থাকে তেমনই রয়েছে শাসন আবার সব কিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে ভাই-বোনের নিখাদ ভালবাসাকে অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা যেন কারও নেই। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে বড় হওয়ায় সেই ছোট্ট বোনটি ছেড়ে চলে গিয়েছে তাঁকে। জন্ম, মৃত্যু তো কারও হাতে নেই। তাই মন না চাইলেও কঠিন বাস্তব মেনে নিয়েছেন গুজরাটের বাসিন্দা উপেন্দ্র গোস্বামী। মৃত বোনের স্মৃতিতে ওই ব্যক্তি যা করলেন, তা জানলে আপনার চোখে জল আসবেই।
আসল ঘটনাটি তবে খোলসা করে বলা যাক। ১৯৯৪ সালে গুজরাটের বাসিন্দা উপেন্দ্রর বোনের মৃত্যুর হয়। তবে মৃত্যুর পরেও প্রতি বছর বোনের জন্মদিনটি কেক কেটেই উদযাপন করেন উপেন্দ্র। সেরকমই একবার জন্মদিন উদযাপন করছিলেন তাঁরা। আচমকাই একটি বিড়াল চলে আসে। জন্মদিনের কেকে মুখ দেয় সে। তারপর থেকেই বিড়ালটি উপেন্দ্রর বাড়িতেই রয়ে গিয়েছে। কারণ, তিনি বিশ্বাস করেন, বিড়াল হিসাবেই হয়তো বোন আবার ফিরে এসেছে। ঘোরাফেরা করছে তাঁর আশেপাশে। সেই বিশ্বাস থেকেই ওই বিড়ালটিকে আর কোথাও যেতে দেননি।

এরপর ২০১৭ সালে ‘ক্যাট গার্ডেন’ খোলেন তিনি। ৫০০ বর্গ ফুট এলাকাজুড়ে রয়েছে ‘ক্যাট গার্ডেন’। বর্তমানে ২০০টি বিড়াল রয়েছে সেখানে। ‘ক্যাট গার্ডেন’ প্রকৃত অর্থেই বিলাসবহুল। রয়েছে ১৬টি কটেজ। ১২টি শয্যার বন্দোবস্ত। প্রতিটি ঘরই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত। তিনবার খেতে দেওয়া হয় বিড়ালদের। শৌচালয়ে বিড়ালদের স্নানের জন্য রয়েছে শাওয়ার। এমনকী রয়েছে প্রেক্ষাগৃহ। সন্ধেবেলা পশুদের শো দেখানো হয় ওই বিড়ালগুলিকে। কোনও বিড়ালের শারীরিকভাবে সমস্যা হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য প্রতি সপ্তাহে পশু চিকিৎসক নিয়ম করে ওই ‘ক্যাট গার্ডেনে’ আসেন।

‘ক্যাট গার্ডন’ চালাতে প্রতি মাসে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ হয় উপেন্দ্রর। নিজের উপার্জনের বেশিরভাগ টাকাই বিড়ালদের যত্নে কাজে লাগান তিনি। উপেন্দ্রর স্ত্রী কর্মরতা। একটি স্কুলে চাকরি করেন। তাঁর বেতনেরও বেশিরভাগ অংশ ‘ক্যাট গার্ডেনে’র পরিচর্চায় স্বামীর হাতে তুলে দেন তিনি। এছাড়াও আহমেদাবাদ জীববিদ্যা চ্যারিটেবল ট্রাস্টও সহযোগিতা করে উপেন্দ্রকে। আপনার কি একবার ‘ক্যাট গার্ডেনে’ ঢুঁ মারার ইচ্ছা হচ্ছে? উপেন্দ্র সাধারণ মানুষের জন্য সে ব্যবস্থা রেখেছেন। প্রতি রবিবার চার ঘণ্টার জন্য খোলা থাকে ‘ক্যাট গার্ডেন’। সামান্য প্রবেশ মূল্য খরচ করলেই ‘ক্যাট গার্ডেনে’ সময় কাটাতে পারেন আপনিও।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.