মানুষের মুখে হাসি ফোটানো জোকারদের প্রতি সম্মান জানাতে অনির্বেদ চট্টোপাধ্যায়ের নতুন ছবি "ভাঁড়"

Odd বাংলা ডেস্ক: রাজ কাপুরের সেই জনপ্রিয় ছবি 'মেরা নাম জোকার'-এর বিখ্যাত গান 'জিনা ইঁয়াহা মরনা ইঁয়াহা, ইসকে সিবা জানা কাঁহা'-এর কথায় উঠে এসেছিল সার্কাসের আসর জমিয়ে রাখা সেইসব জোকারদের জীবনকাহিনি। তাঁদের আরও একবার সম্মান জানাতে স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র নির্মাতা অনির্বেদ চট্টোপাধ্যায় নতুন আঙ্গিকে ক্যামেরার নেপথ্যে। তাঁর পরিচালিত স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি "ভাঁড়" (THE CLOWN)-এর গল্প আবর্তিত হয়েছে সার্কাসের জোকারদের নিয়ে। মূলত সার্কাসের জোকারদের জীবন, তাঁদের কাজের প্রতি সম্মান জানাতেই পরিচালকের এই প্রয়াস। 

ছবিটি ইতিমধ্যেই একাধিক সম্মানে ভূষিত হয়েছে। ছবিটি ব্রিটেনের ফার্স্ট টাইম ফিল্মমেকার ফেস্টিভ্যাল, গোয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের অফিশিয়ার সিলেকশন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল অফ ওয়ার্ল্ড সিনেমা, ইন্টারন্যাশনাল বেঙ্গলি শর্ট ফিল্ম অ্যান্ড থিয়েটার ফেস্টিভ্যালে সেরা অভিনেতা, নওয়াডা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা বাংলা সামাজিক ছবি, শ্রীলঙ্কা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা পরিচালক এবং ইন্ডিয়ান শর্ট ফিল্প ফেস্টিভ্যাল অ্যাওয়ার্ডে সেরা অভিনেতার খেতাব অর্জন করেছে।এছাড়া সম্প্রতি ছবিটি  গোয়া ইন্টারন্যাশনাল শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা শর্ট ফিল্ম এবং সেরা ক্যারেক্টর অ্যাক্টরের এর তকমা পেল।

পরিচালকের কথায়, "মুর্শিদাবাদ জেলার একটি গ্রামের মানুষেরা প্রায় সকলেই যুক্ত সার্কাসের জোকার সাজার পেশায়। যখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল তখন মানুষগুলো আমাদের সকলকে আনন্দে মজায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু আজ কি আমরা জানি তারা ঠিক কেমন আছেন, কীভাবে চলছে তাদের সংসার? এক পয়সা রোজগার না থাকায় তারা কতখানি অন্নকষ্টে দিন কাটাচ্ছেন? না কেউ খোঁজ করেনি, কি অবলীলায় আমরা ভুলে যায় আমাদের এই সুদিনের সাথীদেরকে তাইনা? এই চলচ্চিত্র আমাদের সেই অপরাধবোধকে আরেকটু বাড়িয়ে দেয়।

তিনি আরও বলেন, মূলত এটি একটি জোকারের মনোলগ, যার কথার মধ্যে দিয়ে প্রতিফলিত হয়েছে এই পেশায় যুক্ত প্রতিটি মানুষের ভয়ংকর কষ্টে দিন কাটানোর কথা, আর ভীষণ ভাবে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখায় যে আমাদের সখের সহানুভূতির মধ্যে এক বিরাট ফাঁকি রয়েছে। আমরা মুখে যাই বলি না কেন, এখনো 'inclusiveness' এই শব্দটার অর্থ অনুধাবন করা থেকে অনেক অনেক দূরে এক কৃত্রিম শহুরে তথাকথিত সভ্য জগতে দিন কাটাই, কোথাও আমাদের নিজেদের একটু মানুষ পরিচয় নিয়েও ভাবতে হবে বৈকি, আর এই ভাবতে শেখানোর জন্যেই আমার এই উদ্যোগ"।

ছবিতে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা দেবরাজ মুখার্জী ও বিদিশা দে মজুমদার, সম্পাদনায় রয়েছেনশুভ ভট্টাচাৰ্য, ক্যামেরার কাজ নিখুঁত দক্ষতায় সামলেছেন অভিষেক, প্রযোজনা করেছেন, শুভজিৎ ব্যানার্জী, এবং কাহিনী-চিত্রনাট্য-সংলাপ ও পরিচালনায় অনির্বেদ চট্টোপাধ্যায়।

কোথায় দেখবেন? ছবিটি ইতিমধ্যেই জার্মানি, দুবাই, মার্কিন ওটিটি প্লাটফর্ম, বাংলাদেশ, মুম্বই, কলকাতা ছাড়াও MX Player & Hook films er অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে আপনারা দেখতে পাবেন।

এছাড়াও আপনারা ছবিটি দেখে নিতে পারেন এই লিঙ্কে ক্লিক করে-

শীঘ্রই অনির্বেদ চট্টোপাধ্যায়ের পরবর্তী একটি ভিন্নধর্মী অণুছবি আসতে চলেছে, Time-Lap-এর ওপর, সেই ছবির চিত্রনাট্য লেখার কাজ ইতিমধ্যেই তিনি শুরু করে দিয়েছেন।আর সেখানেও রয়েছে বিশেষ চমক।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.