২০০০ বছর আগে পম্পেই নগরীতে ছিল ফাস্ট ফুডের দোকান

Odd বাংলা ডেস্ক: আমাদের দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় ফাস্টফুডের স্থান সবার উপরে। যদিও চিকিৎসকদের মতে ফাস্টফুড শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। তবে সেসবের তোয়াক্কা কে ই বা করেন। পাশ্চাত্য দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে প্রাচীনকাল থেকে এর সম্পর্ক। তবে আমরা বাঙালিরাও কিন্তু এই ফাস্টফুড থেকে পেছিয়ে নেই। সুযোগ পেলেই এগরোল, চাউমিন, বার্গার, পিৎজার দোকানে আমরা ভিড় জমাই। তবে আমাদের দেশে এর চল খুব বেশি আগে হয়নি। 

বর্তমান সময়ে অলিতে গলিতে গজিয়ে উঠেছে ফাস্টফুডের দোকান। এখন প্রায় পৃথিবীর সব শহরেই এইসব ফাস্টফুডের দোকানের আধিক্য দেখা যায়। তবে প্রবীনদের মতে এই ফাস্টফুড কালচার বর্তমান সময়ের দেন, যদিও ইতিহাস অন্য কথা বলে। সম্প্রতি একটি প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারের উঠে এসেছে এক বিস্ময়কর তথ্য। ফাস্টফুড কালচার আধুনিক সময়ের নয় বরং অতীতেও এই ফাস্টফুডের প্রচলন ছিল। 

২০১৯ সালে রোমান প্রত্নতত্ত্ববিদরা, মাটি খুঁড়ে একটি প্রাচীন শহরের খোঁজ পান। গবেষণা করে এই জায়গায় প্রাচীন রোমান সভ্যতার জীবনপ্রণালীর বেশকিছু নিদর্শন পাওয়া গেছে। নব্য আবিষ্কৃত এই প্রাচীন শহরে খুঁজে পাওয়া গেছে ফাস্ট ফুড জয়েন্টস। থার্মোপোলিয়াম নামে এই ফাস্টফুড জয়েন্ট, যার আক্ষরিক অর্থ “একটি জায়গা যেখানে গরম কিছু বিক্রী করা হয়” প্রায় ২০০০ বছর পুরোনো। এই শহরটি পর্যটকদের জন্য আগস্টের ১২ তারিখ থেক সাধারণ দর্শকদের দেখার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ ইটালির ন্যাপলসের সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত পম্পেই প্রত্নতাত্ত্বিক পার্কে এই প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।

পম্পেইর প্রত্নতাত্ত্বিক পার্ক কর্তৃপক্ষের মতে রোমান যুগে এই ফাস্ট ফুড জয়েন্টগুলোতে মূলত দরিদ্র এবং মিডিল ক্লাস মানুষজন রাতের খাবার খেতে আসতো। বৃহস্পতিবার থেকে দর্শকদের জন্য খুলতে যাওয়া রেজিও ফাইভ জায়গাটির বিশেষত্ব হলো এখানকার খাবারের কাউন্টারগুলো ২০০০ বছর পুরোনো নানা চিত্রকলায় পরিপূর্ণ।


ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করে প্রাচীন এই জলখাবারের জায়গাগুলোতে হাঁসের হাড়, ছাগল, মাছ,শুয়োর ইত্যাদি পাওয়া গেছে। দোকানগুলোর মেঝে পলিক্রোম মার্বেল দিয়ে তৈরি। প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান নানা ধরণের খাবারের মধ্যে একটি ছিল পাইল্লা, যা  স্পেনের একটি খাবার এবং এটি কিছুটা বিরিয়ানীর মতো। পম্পেইতে খননকাজ চালানোর সময় একটি নয় বরং এমন অনেক ফুড জয়েন্ট এর সন্ধান পাওয়া গেছে। দুজন মানুষের সংরক্ষিত দেহও পাওয়া গেছে ওই খননের সময়। বিশেষজ্ঞদের মতে এই শহর শহরটি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল। খননকাজে বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর ছাইয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে যা থেকে তারা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন।


খাবারের দোকানগুলোর গায়ে নানা চিত্র, যেমন এক ঢেউয়ের সামনে ঘোড়ায় চাপা জলদেবী, উল্টোন হাঁস এবং মুরগীর ছবি দেখে অনুমান করা হচ্ছে এগুলো সম্ভবত খাবারের মেনু। ভলেরিয়া আ্যমোরত্তি নামক এক প্রত্নতাত্ত্বিক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন যে,প্রাথমিক পরীক্ষা করে ছবিগুলো কী বর্ননা করছে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এই খাবারের দোকানগুলোর বিভিন্ন অংশে খাদ্য এবং পানীয় কার্যকরীভাবে বিক্রী হতো। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.