জন্মদিনে ভদ্র: আকাশবাণীর সিকিউরিটি গার্ড পাস চেয়েছিল, বৃদ্ধ বীরেন ভদ্র চিৎকার করে বলেছিলেন, "জন্ম দিয়েছি রেডিয়োকে আমি!"


Odd বাংলা  ডেস্ক: আকাশবাণী নানা সময়ে নানান বিখ্যাত ব্যাক্তিত্বদের অস্বীকার করেছে। স্বয়ং অমিতাভ বচ্চনও তো কাজ পাননি এই সংস্থাতে। কিন্তু বীরেন বাবু? আসলে ওই একটা কথা আছে না "পহেলে দর্শনধারী" সেরকমটাই হয়েছিল বীরেন বাবুর সঙ্গে। বগল দাবা করে বাজারের ব্যাগ নিয়ে আসা লোকটাই যে মহিষাসুরমর্দিনী সেটাই বা বোঝার উপায় কি?

আসলে আজ থেকে দুদশক আগেও তো বাঙালি এতটা দর্শন সর্বস্ব জাতি ছিল না। সাদা মাটা পোশাক বাঙালি ভালোবাসতো। টাইট প্যান্ট বা ব্লেজার তখনও তো বাঙালির অফিসের পোশাক হয়ে ওঠেনি। তাই বীরেন বাবুরও সেটাই চরিত্র ছিল। মানুষটার শেষ জীবনে জুটেছে অনেক বঞ্চনা। সবই হাসি মুখে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু একবার তিনি বেজায় চটে গিয়েছিলেন।

আকাশবাণীতে চুক্তির ভিত্তিতে যারা কাজ করে তাদের একটা পোশাকি নাম আছে।  "এমপ্যানেল্ড আর্টিস্ট"। যার অর্থ আপনি কাজ করবেন আকাশবাণীর জন্য কিন্তু আপনার পেট চালানোর দায়িত্ব আকাশবাণী নেবে না। সেরকমটাই ছিলেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। আজ আকাশবাণীর যে চেয়ারগুলিতে সরকারি কর্মচারীরা পা তুলে বসে থাকেন, তার একটাও বীরেন বাবুর জন্য জোটেনি। আলাদা চেম্বারও তো ছিল না। অথচ চিরদিন আকাশবাণীকে নিজেরই মনে করেছিলেন। কিন্তু অবসর নেওয়ার পর চিত্রটা হয়ে যায় অন্য রকম। 


অবসর নেওয়ার পর আকাশবাণী ভবনে কী একটা কাজে এসেছিলেন অবসর প্রাপ্ত বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র। একজন সিকিউরিটি গার্ড তাঁকে দাঁড় করিয়ে দেয়। এবং তার কাছে ভেতরে যাওয়ার পাস চেয়ে বসে। সেদিন মাথায় রক্ত উঠে গিয়েছিল ওঁর, থরথর করে কাঁপছিলেন। শ্বেত-শুভ্র চেহারার লোকটার শিরাগুলো সেদিন দপদপ করে কাঁপছিল। চিৎকার করে বলেছিলেন, “জন্ম দিয়েছি রেডিয়োকে আমিই! জন্ম দিয়েছি! আমিই জন্ম দিয়েছি! আমার কাছে পাস চাইছ? পাস?”
Blogger দ্বারা পরিচালিত.