কথা বলে উঠলেন তিন হাজার বছর আগের মমি!


Odd বাংলা ডেস্ক: মিশরের প্রাচীন শহর থিবসের কারনাকে এক মন্দির থেকে উদ্ধার হলো তিন হাজার বছর আগের এক মমি। আর সেই মমিই বলে উঠল কথা! মৃত্যু সময়ে তার শেষ কথা শুনলেন বিজ্ঞানীরা। এমন দাবি করে সেই মমি গবেষকরা বলছেন, তিন হাজার বছর পুরনো মমির কণ্ঠ ছিল খুব ক্ষীণ এবং অস্পষ্ট। তিনি যেসব শব্দ উচ্চারণ করছিলেন তার অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, গত বুধবার সায়েন্টিফিক রিপোর্টস নামে এক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটি এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে । মৃত্যুর তিন হাজার বছর পর ওই মমির কথা বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেই জার্নালে। গবেষক দল জানিয়েছেন, মমিটি সেই মন্দিরের পুরোহিত নেসিয়ামানের। তিনি প্রাচীন মিসরীয় দেবতা আমুনের ওই উপাসনালয়েই থাকতেন তিনি। তিন হাজার বছর আগে মন্দিরেই মৃত্যু হয় তার। তাই বলে মৃত ব্যক্তি কথা বলেছে, বিষয়টি কী বিশ্বাসযোগ্য! এর ব্যাখ্যায় ওই জার্নাল জানিয়েছে, ব্যাপারটি এমন নয় যে জীবিত মানুষের মতো কথা বলে উঠেছে মমি। মমিকে কথা বলাতে নানা পরীক্ষা-নীরিক্ষার মধ্যে দিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরজন্য থি ডাইমেনশন প্রিন্টার ভোকাল বক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।




 বিজ্ঞানীরা জানান, মানুষের ল্যারিংসে শব্দ তৈরি হয়। আর ভোকাল ট্র্যাক প্যাসেজে সেই শব্দ ফিল্টার হয়ে অর্থপূর্ণ শব্দ তৈরি করে। এই পুরো বিষয়টাকে একসঙ্গে মানুষের ভয়েস বক্স বলা হয়। প্রথমে বিজ্ঞানীরা ওই মমির ভোকাল ট্র্যাকের ডাইমেনশন থি-ডি প্রিন্টারে কপি করেন। গবেষক দল জানায়, পুরোহিত নেসিয়ামানের মমি এত সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছিল যে, তিন হাজার বছর পেরিয়ে গেলেও তার ভোকাল ট্র্যাকের কোষগুলো অক্ষত রয়েছে। সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে প্রথমে সেটা পরীক্ষা করা হয়। তারপর থিডি-প্রিন্টারে ওই মমির ভোকাল ট্র্যাকের কপি করে ল্যারিংসে কৃত্রিমভাবে তার কণ্ঠস্বর তৈরি করেন বিজ্ঞানীরা। কি আর কেমন শোনা গিয়েছিল সেই কণ্ঠস্বরে। গবেষকরা জানিয়েছেন, তিন হাজার বছর আগের ওই মমি ক্ষীণ কণ্ঠে ‘বেড’ বা ‘ব্যাড’ জাতীয় কিছু শব্দ উচ্চারণ করেছেন। এটাই ছিল তার শেষ শব্দ। আরও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে নেসিমিয়ানের শেষ বাক্য জানারও চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আর তা জানা গেলে ওই পুরহিতের শেষ ইচ্ছা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে দাবি করেন তারা। মমি নেসিয়ামানের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন ঐতিহাসিকরা। তারা জানিয়েছেন, ৫০ বছর বয়সে কিভাবে মৃত্যু হয়েছিল তার। ইতিহাসবিদরা জানিয়েছেন, শেষ জীবনে মুখে অ্যালার্জির দেখা গিয়েছিল নেসিয়ামানের। এই অ্যালার্জির মাত্র এতোই বেড়ে যায় যে, দাঁত, মাড়ি ক্ষয়ে যেতে শুরু করে সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। মুখের সংক্রমণের কারণে শেষ জীবনে তিনি ঠিক মতো কথা বলতে পারতেন না নেসিয়ামান। খুব কষ্টে যা উচ্চারণ করতে পেরেছেন তাই তিন হাজার বছর পর আবিস্কার করল বিজ্ঞানীরা।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.