কাদম্বরী, রানু বা ওকাম্পো নয়, রবি ঠাকুরের জীবনের প্রথম প্রেম এই মেয়েটা


Odd বাংলা ডেস্ক: প্রেমেও অসাধারণ ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। প্রথম যৌবনে নিবেদিত তরুণীর প্রেম উপলব্ধ হয় কবির শেষ জীবনে এবং তার প্রতি নিজের আকর্ষণও আবিষ্কৃত হয় বিগত যৌবনে। অথচ বয়ঃসন্ধিক্ষণে নারীর একটুখানি ইঙ্গিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে পুরুষমাত্রই। এই পুরুষটি নিজের ভাবজগতে জীবনের শুরু থেকেই এমনই নিমগ্ন ছিলেন যে প্রেমিকার দৈহিক উৎপাতেও গায়ক-কবি শৈল্পিক ঘোর থেকে জেগে ওঠেননি। কিন্তু এসবেতে কিছু আসে যায়নি বিদুষী মারাঠি রূপসী তরুণী আন্না তড়খড়ের। উঠতি কবির উত্তরকৈশোর ও প্রথম যৌবনের সন্ধিক্ষণে দেখা সুঠাম সুপুরুষ রবীন্দ্রনাথের প্রতি ভালোবাসা তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনটির শেষ পর্যন্তই হূদয়ে পোষণ করে গেছেন আন্না। সম্ভবত আন্না-ট্যাগোরের প্রণয়-সম্পর্কের বিচিত্র এই বিরল ধারার কারণেই লাখ লাখ পৃষ্ঠার রবীন্দ্রচর্চার পরিসরেও আন্না পান্ডুরং তড়খড়ের কোনো জায়গা হয় না। ফলে কাদম্বরী, রানু আর ওকাম্পোকে নিয়ে ক্রমবর্ধিষ্ণু কোলাহলের তলে অশ্রুতির পরম্পরায় আন্না-প্রসঙ্গটি আজ প্রায় সম্পূর্ণ বিস্মৃত।

রবীন্দ্রনাথ প্রথম প্রেমে পড়েন বোম্বাইতে থাকাকালীন। প্রেমিকার নাম আন্না তড়খড়। এই মারাঠি কন্যার প্রেম খুব অল্প সময়ের জন্য হলেও বেশ তাত্পর্য ছিল কবিজীবনে। কারণ কবি তখন সবে কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পদার্পণ করেছেন। উল্টোদিকে আন্না তড়খড় বিদুষী, বুদ্ধিমতি, রূপলাবণ্যে ভরপুর এক তরুণী। এই মারাঠি কন্যা কবির কাছ থেকে ভালোবেসে একটি ডাকনাম চেয়েছিলেন। ‘নলিনী’ নামটি তার জন্য যেন তুলে আনেন কবি। সেই নাম পেয়ে আন্না বলেছিল, ‘কবি, তোমার গান শুনলে আমি বোধহয় আমার মরণদিনের থেকেও প্রাণ পেয়ে জেগে উঠতে পারি।’ 
বলা বাহুল্য, ‘নলিনী’ নামটি রবীন্দ্রনাথের খুব প্রিয় ছিল। কবির প্রথম জীবনে রচিত বহু কাব্য-কবিতা-নাটকে এই নামের উল্লেখ পাওয়া যায় সে কারণেই। বহুকাল পরে অতুলপ্রসাদ সেন এবং দিলীপ কুমার রায়ের সঙ্গে একান্ত আলাপে এই তরুণীর কথা কবিকে স্মরণ করতে দেখা যায়। আন্না তড়খড় ছিল ডা. আত্দারাম পাণ্ডুরংয়ের কন্যা। তার সঙ্গে কবির প্রেম ছিল মাত্র এক মাসের সামান্য কিছু বেশি। জানা যায়, বহুদিন তার সঙ্গে কবির যোগাযোগ ছিল পত্র বিনিময়ের মাধ্যমে।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.