হাতে কাজ নেই, তাই সাইকেল সারিয়ে, সবজি বিক্রি করে দিন কাটছে সরকারী স্কুলের অতিথি শিক্ষকদের


Odd বাংলা ডেস্ক: চলতে থাকা মহামারি এবং লকডাউনের জেরে অসংখ্য মানুষ আজ কর্মহীন। তাই পেটের দায়ে আজ অনেকেই বিকল্প পেশা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যান্য অনেক পেশার মানুষের মতো একই সমস্যায় পড়েছেন দিল্লির বিভিন্ন সরকারি স্কুলের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা। এইসব চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা দিন অনুসারে বেতন পেয়ে থাকেন। কিন্তু লকডাউনের জেরে বন্ধ স্কুল, তাই বন্ধ আয়ের পথও। জীবিকা নির্বাহের জন্য আজ তাঁরা বিকল্প পেশার সন্ধানে। 

প্রসঙ্গত, দিল্লিতে গত ১৯ মার্চ থেকে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এরপর থেকে যেহেতু অনলাইন ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তাই বাড়ি থেকেই ক্লাস নিচ্ছিলেন কিছু অতিথি শিক্ষক।এরপর ১১ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত দিল্লি সরকার গরমের ছুটি ঘোষণা করায় আর কোনও ভার্চুয়াল ক্লাস করাতে পারেননি তাঁরা। যার ফলে বন্ধ ছিল রোজগার। 

সূত্রের খবর, গত ৩১ মার্চের পর প্রায় ১০০০ শিক্ষকের চুক্তিপত্র বাড়ানো হয়নি কারণ তাঁরা বাধ্যতামুলক সেন্ট্রাল টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট-এ অংশ নিতে পারেননি। পরীক্ষাটি বছরে ২ বার নেওয়া হয়ে থাকে। পরের পরীক্ষাটি জুলাইয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমান মহামারি পরিস্থিতিতে সেই পরীক্ষা আদৌ নেওয়া হবে কিনা তা এখন অনিশ্চিত। তাই সরকারি স্কুলের অতিথি শিক্ষকরা এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে। আর সেই কারণেই দিল্লির একটি সরকারির স্কুলের ইংরেজির অতিথি শিক্ষক ২০০০ টাকার বিনিময়ে একটি ঠেলা গাড়ি ভাড়া নিয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত ফল বিক্রি করছেন। তিনি জানিয়েছেন দিনে তাঁর ৪০০ থকে ৫০০ টাকা মতো আয় হয়। বাড়িতে তাঁর অসুস্থ বাবা। বাবার ওষুধের জন্য অর্থের প্রয়োজন। বাড়িতে তাঁর ছোট তিন ভাই পড়াশোনা করছে। তাই যতদিন না তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে ডাক না পাচ্ছেন, ততদিন তিনি ফলই বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন। 

দিল্লির আর একটি সরকারি স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের অতিথি শিক্ষক তাঁর ভাড়া বাড়ির কাছেই একটি সাইকেল সাড়াইয়ের দোকান খুলেছেন। তিনি জানিয়েছে বাড়িতে তিনিই একমাত্র রোজগেড়ে। বাড়িতে তাঁর বাবা-মা, স্ত্রী এবং এক ছেলে রয়েছে। ছেলে বেসরকারি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। ছেলের স্কুলের ফি জমা দিতে পারেননি তিনি, কারণ এপ্রিল থেকে তাঁর হাতে কাজ নেই। সেই কারণেই তিনি সাইকেলের টায়ার সারানোর কাজ করছেন, যাতে পরিবারের খরচ বহন করতে পারেন। 

সূত্রের খবর দিল্লির ১০৩০টি সরকারি স্কুলে প্রায় ২০ হাজার অতিথি শিক্ষক নিযুক্ত। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সকলকে বেতন দেওয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানিয়েছন এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তবে তিনি এও বলেন যে, তবে যখনই প্রয়োজন হবে এইসব শিক্ষকদের পুনরায় ডাকা হবে। 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.