ঠাণ্ডা জলের পরিবর্তে গরম জল পান করা কি ভাল? কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা জেনে নিন


Odd বাংলা ডেস্ক: খাবার খাওয়ার সময় অনেকেই ঠান্ডা জলের পরিবর্তে গরম জল পান করেন। অনেকেই জানেন, ঘুম থেকে উঠে বা ঘুমোতে যাওয়ার আগেও ঈষদুষ্ণ জল খাওয়া যে শরীরে খুবই উপকারী। ঈষদুষ্ণ জল খেলে কী কী উপকার পাওয়া যায়। জেনে নিন-

১) হজমে সাহায্য করে- খাবার খাওয়ার সময় বা খাবার খাওয়ার পর ঠান্ডা জল খেলে খাবারের মধ্যে থাকা ফ্যাট জমে যায়। যার ফলে পাকস্থলীর গায়ে চর্বির স্তর তৈরি হয়। গরম জল খাদ্যের মধ্যে থাকা এই চর্বিকে তরল রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে খাবার খুব সহজে হজম হয়। 

২) শরীরে রক্ত চলাচল সঠিক রাখে- গরম জল পান করলে শরীরে রক্তনালীগুলি প্রসারিত হতে শুরু করে, যার ফলে শরীরে রক্ত চলাচল খুব স্বাভাবিক হয়। শরীরে রক্ত চলাচল ঠিক থাকলে স্নায়ু সচল থাকে, শরীরে কোনও রকম চাপ পড়ে না, তা না হলে রক্ত জমাট বাঁধলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

৩) সর্দি-কাশি থেকে আরাম- অনেকেই সাইনাসের ব্যথায় খুবই কষ্ট পান বা চট করে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার একটা ধাত রয়েছে। তাঁরা গরম জল খেলে আরাম পেতে পারেন। 


৪) ক্ষতিকারক টক্সিন বেরিয়ে যায়- ঠান্ডা জলের বদলে যদি ঈষদুষ্ণ জল পান করা যায় তাহলে শরীরের তাপমাত্রা কম হতে থাকে, যার ফলে ঘাম হতে শুরু করে। ঘাম হলে একদিকে শরীরের রক্ত চলাচল যেমন কমে যায়, তেমনই শরীর থেকে দূষিত টক্সিন বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। ফলে শরীর থাকে সুস্থ।

৫) ডিপ্রেশন কমায়, ঘুম বাড়ায়- যারা অ্যানক্সাইটি বা ডিপ্রেসনের সমস্যায় ভুগছেন। তাঁরা প্রতিদিন রাতে এক গ্লাস করে উষ্ণ জল পান করুন। এতে করে আপনার মস্তিষ্কের শিরা-উপশিরাগুলি প্রশমিত হবে। যার ফলে ডিপ্রেশনের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হয় এবং ঘুম ভাল হবে। 

৬) ঋতুকালীন যন্ত্রণা প্রশমন করে- পিরিয়ডের সময় তলপেট বা কোমরে ব্যথা হলে ঠান্ডা জলের পরিবর্তে যদি গরম জল পান করা যায় তাহলে পিরিয়ডের ফ্লো সঠিক থাকে। কোনও ক্র্যাম্প বা ক্লড থাকে না, যার ফলে যন্ত্রণার উপশম হয়। 

৭) অকাল বার্ধক্যের ছাপ পড়তে দেয় না- শরীর থেকে যদি অপ্রয়োজনীয় পদার্থ বের হতে না পারে, তাহলে তার প্রভাব পড়ে ত্বকের ওপর। শরীরে জমে থাকা অপ্রয়োজনীয় বর্জ্য ত্বকের কোষগুলিকে নষ্ট করে দেয়। উষ্ণ জল পান করলে ত্বকের স্থিতিস্থাপকাতা বজায় থাকে। ফলে অকালে বয়সের ছাপ আর পড়ে না।

৮) চুলের যত্নে গরম জল- অকালে চুল পড়ে যাওয়া, ভেঙে যাওয়া এবং খুশকির মতো সমস্যা সহজেই দূর করে গরম জল। ডারমেটোলজিস্টরা বলেন, অকালপক্কতা ও খুশকি রোধ করতে গরম জল পানের কোনও বিকল্প নেই। 

তবে অতিরিক্ত গরম জল খাওয়ায় কিন্তু ক্ষতি- অনেকে ওজন কমাতে গরম জলের সঙ্গে লেবুর রস দিয়ে খাওয়ার পক্ষপাতী। এতে শরীরের বাড়তি মেদ ঝরে যায় একথা যেমন ঠিক তেমনই শরীরের একাধিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। কারণ লেবুর জলে থাকা ভিটামিন সি গরম জলের সংস্পর্শ এলে নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে শরীরে কোনওরকম ভিটামিন প্রবেশ করে না। শুধু তাই নয়, এর ফলে শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা কয়েক গুণ বেড়ে যেতে পারে। সেইসঙ্গে ক্ষতি হয় দাঁতের এনামেলও। যাঁদের এমনিতেই লেবু খেলে দাঁত টকে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে, তাদের জলের সঙ্গে লেবু (সাইট্রিক অ্যাসিড) মিশলে ক্ষতি বাড়ে বই কমে না। এর ফলে দাঁত খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.